আজ রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। এ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রশ্নফাঁস এড়াতে এবং নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য ৩ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে সরকারের।
শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ই ডিসেম্বর। ১৫ ডিসেম্বর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর। চলতি বছরের পরীক্ষা পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এইচএসসিতে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না। এই বিষয়ের নম্বর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে দেয়া হবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার্থী কমেছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন। এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন।
এবছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন। মোট কেন্দ্র সংখ্যা ২ হাজার ৬৪৯টি, মোট প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৮১টি। গত বছরের তুলনায় কেন্দ্র বেড়েছে ২৮টি, প্রতিষ্ঠান কমেছে ২টি। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন শিক্ষার্থী। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য আলিম পরীক্ষায় অংশ নেবে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি বিএম, ভোকেশনাল এবং ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় অংশ নেবে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী। এবারে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ৪ হাজার ৬৪৭টি প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এদের মধ্যে ৪ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৩০ জন ছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫০৬ জন, মানবিক বিভাগে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৬৭৮টি প্রতিষ্ঠানে ৪৪৮টি কেন্দ্রে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ৫১ হাজার ৬৯৫ জন ছাত্র এবং ৪৩ হাজার ৬৮ জন ছাত্রী রয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১ হাজার ৮৫৬টি প্রতিষ্ঠানে ৬৭৩টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৮৮ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র এবং ৩৪১৩ জন ছাত্রী রয়েছেন। দেশের বাইরে আটটি স্থানে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। তার মধ্যে জেদ্দায় ৫১ জন, রিয়াদে ২০ জন, ত্রিপোলিতে ৪ জন, দোহায় ৬২ জন, আবুধাবিতে ২৭ জন, দুবাইয়ে ২১ জন, বাহরাইনে ১৫ জন এবং সাহাম, ওমানে ২২ জন মিলে মোট ২২২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন।
পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। অভিভাবকদেরও সামাজিক দূরত্ব রেখে চলাফেরার অনুরোধ করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেয়া হবে।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। এ অবস্থায় গত বছর প্রায় ৯ মাস পিছিয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি এসএসসি আর ডিসেম্বরের শুরুতে নেয়া হয় এইচএসসি পরীক্ষা। তবে এ বছর করোনার পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।