বগুড়ার ছেলে আশরাফুল আলম। সোশ্যাল মিডিয়ার বরাতে ‘হিরো আলম’ নাম নিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। শুরু থেকে এ পর্যন্ত পৃথক সময়ে কখনো অভিনয়-গান-সিনেমা নির্মাণ করে এবং কখনো বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। এ কারণে সোশ্যালে নেটিজেনদের সমালোচনার শিকারও হয়ে থাকেন হিরো আলম।
সম্প্রতি হাসিওয়ালা সিনেমার নির্মাতা অতিন্দ্র কান্তি কাজুর কবিতা আবৃত্তি করে ফের বিতর্কের সৃষ্টি করেন হিরো আলম। বিষয়টি সোশ্যালে অধিকাংশ ব্যক্তিই নেতিবাচক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
এদিকে হিরো আলমের কর্মকাণ্ড নিয়ে এবার মন্তব্য করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারী। তিনি জানিয়েছেন, হিরো আলমের কর্মকাণ্ড নিয়ে যত হাসি-তামাশাই করা হোক না কেন, তাকে থামানো যাবে না। কেউ পারবে না। পুলিশও পারে না।
কয়েক মাস আগে হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সেই সময় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জানান, হিরো আলম ফেসবুক/ইউটিউব চ্যানেল তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নিজস্ব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, কনটেন্ট শেয়ার করে থাকেন। এসব কনটেন্টের কিছু অংশে বিধিবহির্ভূতভাবে পুলিশের পোশাক পরে আপত্তিজনকভাবে কিছু অভিনয় প্রদর্শিত হয়, যা ডিএমপির দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের সংগীত গেয়ে তা প্রচার করেন; যার বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জনসাধারণ কর্তৃক আপত্তি উত্থাপিত হয়। বিকৃতভাবে পুলিশের পোশাক পরে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং বিভিন্ন প্রতিথযশা শিল্পী ও কলাকুশলীদের গান বিকৃত সুরে উপস্থাপন সম্পর্কিত তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তাকে অবহিত ও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডিবি কার্যালয়ে গত ২১ জুলাই সকালে ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ওইদিন দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয় ত্যাগ করেন হিরো আলম।
হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেই সময় ডাকা হলে অনেকে ভেবেছিলেন, তিনি হয়তো আর এমন কর্মকাণ্ড করবেন না! কিন্তু ঘটে বিপরীত। আর এর কয়েক মাস পর আবার কবিতা আবৃত্তি করায় নেতিবাচক মন্তব্য উঠে নেটিজেনদের।
নির্মাতা মালেক আফসারী সেই বিষয় উল্লেখ করে বলেন, পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে। তখন ভেবেছিলাম, এবার বোধহয় হিরো আলম থামবে। কিন্তু না! পৃথিবীর অর্ধেক ভাষায় গান গেয়ে ফেলেছে সে। কোন ভাষা না জানে। মনে হয় শুধু বার্মিজ ভাষায় গান করেনি। আর সব ভাষাতেই গান গেয়ে ফেলেছে। গানগুলো সে কীভাবে গায়, কেন গায়?
এরপরই হিরো আলমের কবিতা আবৃত্তির প্রসঙ্গ তুলেন এই নির্মাতা। বলেন, কবিতা আবৃত্তি করল, কবি হয়ে গেল, চশমা পরে, চুল পাকিয়ে, কবিদের মতো একটা চাদর গায়ে জড়িয়ে, এসব কেন? হিরো আলম কেন? আসলে এখানে তার কোনো দোষ নেই।
মালেক আফসারী বলেন, হিরো আলম বলে, মানুষকে আনন্দ দেয়ার জন্যই এসব করে সে। কিন্তু কিছু মানুষ খুব বাজেভাবে সমালোচনা করে তার। সে নিজেকে ভাইরাল করতে পেরেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চ্যানেল নিউজ করেছে তাকে নিয়ে।
নির্মাতার ভাষ্য, হিরো আলমকে অনুসরণ করি আমি। তবে আমি হিরো আলম হতে চাই না, কিন্তু তার চেষ্টাকে ফলো করি। সাধুবাদ জানাই। কাউকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। তার জন্য মন থেকে দোয়া করি।