মোড়ে মোড়ে শীতের পিঠা

Slider গ্রাম বাংলা

চলছে কার্তিকের ১৪তম দিন, হেমন্তের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া চলছে। ভোরের আলোয় হালকা কুয়াশার ছোঁয়া শীতের বার্তা দিচ্ছে। সেই বার্তা রাজধানীতে এখনো তেমনভাবে পৌঁছায়নি। তাতে কী?

শীতের আয়োজন হিসেবে পিঠার দোকানে ছেয়ে গেছে রাজধানীর পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি ও বিভিন্ন মোড়। বসেছে অস্থায়ী পিঠার দোকান। এসব দোকানে মাটির চুলায় কিংবা গ্যাস বা কেরোসিনের চুলায় বানানো হচ্ছে চিতই-ভাপা। সঙ্গে রয়েছে হরেক পদের মুখরোচক ভর্তা।

ভাপার চেয়েও জনপ্রিয়তার দিক থেকে রাজধানীর ঢাকার বাজার এগিয়ে আছে চিতই। এই চিতই পিঠার মূল আকর্ষণ এর সঙ্গে দেওয়া ভর্তা। বিশেষ করে সরিষা, কাঁচা মরিচ, ধনিয়া ও শুটকির ভর্তা জিভে জল এনে দেয়।

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জ রোডের মাথায় নতুন হওয়া অস্থায়ী এক পিঠার দোকানে ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠা বিক্রি করছিলেন সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুন। কথা হয় তাদের সঙ্গে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, শীত আসছে, তাই পিঠার এই দোকান দিয়েছি। প্রতি বছরই শীতের সময় পিঠা খুব চলে। তাই প্রতিবারই এভাবে অস্থায়ী দোকান দিই। চিতইয়ের সঙ্গে থাকে তিন রকমের ভর্তা

তিনি বলেন, সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় পিঠার সাইজ একটু বড় করে ১০ টাকা পিস বিক্রি করছি। খড়ি (লাকড়ি) থেকে শুরু করে আটাসহ সব ধরনের উপকরণের দাম অতিরিক্ত বেশি। তাই ১০ টাকা ছাড়া বিক্রির উপায় নেই।

সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন, শীত এখনো আসেনি। তবে মানুষ বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নাস্তা হিসেবে এসব পিঠা খুব খায়। শীত সামনে রেখে এই নিকুঞ্জ এলাকাতেই পিঠার ২০টি নতুন দোকান বসেছে। শীতে পুরো ঢাকা শহরেই পিঠা খুব চলে।

রাজধানীর মগবাজার এলাকাতেও দেখা গেল এমন অস্থায়ী বেশ কিছু পিঠার দোকান। চিতই পিঠার দোকানের সংখ্যা বেশি হলেও কিছু ভাপা পিঠার দোকানও মিলল।

ভাপা পিঠার দোকানি খোরশেদ আলম বলেন, চিতই পিঠার চেয়ে ভাপা পিঠার খরচ বেশি এবং বানানোর কৌশলও ভিন্ন। রুচি-চাহিদা অনুযায়ী শীতের সময় মানুষ বিভিন্ন ধরনের পিঠা খায়। তাই আমি ভাপা পিঠার দোকান বসিয়েছি।

তিনি বলেন, ভাপা পিঠা বানালে লাভ কম,কিন্তু কষ্ট বেশি। মূলত শীত পড়লে পিঠা বিক্রি বাড়বে। কিন্তু কিছুটা আগে এই পিঠার দোকান দিলাম অন্যদের দেখে। রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় অলি গলি সবখানেই ইতোমধ্যে পিঠার দোকান বসে গেছে। শীত এলে পিঠার দোকান আরও বেড়ে যাবে।

একই এলাকায় পাশের একটি চিতই পিঠার অস্থায়ী দোকানে দাঁড়িয়ে ভর্তা দিয়ে ধোঁয়া ওঠা চিতই খাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল আলিম বাবু। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় ভাজাপোড়া কিছু খাওয়ার চেয়ে এই চিতই পিঠা খাওয়া অনেক ভালো। তাই অনেকেই বিকেলে বা সন্ধ্যায় এটা নাস্তা হিসেবে খান। আর চলতি পথে অলি গলি সর্বত্রই এর দোকান পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, শীত আসছে বলে রাজধানীর সব এলাকায় পিঠার অস্থায়ী দোকান বেড়েছে। স্বল্প পুঁজিতে অস্থায়ী এই ব্যবসায় লাভও বেশ। সেই কারণে শীত এলে এসব দোকান বেড়ে যায়। আর পিঠা পথচারীদের কাছে অন্যতম প্রিয় নাস্তার আইটেম। তাই চাহিদার পাশাপাশি বিক্রিও বেশি। শীতের সময় পিঠার দোকান বাড়ে। তবে এবার শীত আসার আগেই দোকান বেড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *