নকলবাজ দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করায় হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পৌর মেয়র। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের কাছে প্রধান শিক্ষক এ অভিযোগ করেন।
রাজারামপুর হামিদুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার এসএসসি স্কুল টেস্টে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় দুই ছাত্র মোবাইল ফোনের কপি দেখে নকল করে। এ অপরাধে তাদের বহিষ্কার করেন শিক্ষকরা। পরদিন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুল ইসলাম এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে আমাকে অনুরোধ করেন। তাদের বুঝিয়ে বলি-এ ধরনের অন্যায় অনুরোধ মেনে নিলে পরবর্তীকালে ছাত্ররা আর পড়াশোনা করবে না। এতে স্কুল ও শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সামিউল ইসলাম আরও বলেন, শনিবার মেয়র মোখলেসুর আমাকে ফোন করে ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টা দেখব বলে জানালে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন-‘আমি কে বলছি এটা কি আপনি জানেন। আমি যা বলছি আপনাকে তাই করতে হবে!’ উত্তেজিত হয়ে কেন এভাবে কথা বলছেন-জানতে চাইলে তিনি আমাকে তার পার্কে ডাকেন। আমি যেতে না চাইলে আমি কোথায় অবস্থান করছি তা-ই তিনি জানতে চান। পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আছি বলি। এ সময় সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম ছিলেন। রাত ১১টার দিকে সেখানে দলবল নিয়ে এসে মেয়র আমাকে মারধর শুরু করেন। ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালসহ মেয়রের বাহিনীর সদস্যরাও আমাকে মারধর করে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে রাজি হওয়ায় আমি রক্ষা পাই। এখন আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঢাকা স্ট্যান্ডের পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে হঠাৎ কয়েকটি মোটরসাইকেলে দলবল নিয়ে আসেন মেয়র মোখলেুসর রহমান। এসেই তিনি প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলামকে মারধর শুরু করেন। এরপর কার্যালয়ে ঢুকিয়ে তাকে আরেক দফা মারধর করা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা তাকে উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যান।
তবে প্রধান শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান বলেন, কেউ অভিযোগ করলেই তা সত্য হয়ে যায় না। এমন ঘটনায় আমি জড়িত নই। আমি কাউকে মারধর করিনি।