অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কৃষিই প্রধান নিয়ামক: রাষ্ট্রপতি

Slider জাতীয়


রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। এ প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। কৃষি উৎপাদন বাড়ানো গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার হ্রাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কৃষিই অন্যতম প্রধান নিয়ামক। কৃষি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের কাঁচামাল সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়।

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে রোববার (১৬ অক্টোবর) দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’ যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, কৃষির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের মধ্যে খাস জমি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফসলের পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ খাতেও ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

আবদুল হামিদ বলেন, প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রভাবের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তঃসংযুক্ত হয়ে উঠছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ও খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষ তাদের জীবনযাত্রার জন্য কৃষি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভর করে। মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। এ প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। কৃষি উৎপাদন বাড়ানো গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি, প্রাণিজ আমিষ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

আমি আশা করি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে টেকসই করতে ফসলের পুষ্টি সমৃদ্ধ নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখবে। আমি ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *