সারাদেশে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের জন্য সরকারকে কটাক্ষ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের আশংকা করেছেন যে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘দেশের মানুষ চার থেকে ১০ ঘণ্টা অসহনীয় লোডশেডিং-এর সম্মুখীন হচ্ছে। ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতি রয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে সরকার জ্বালানি কিনতে পারছে না।’
সরকারি কোষাগারে টাকা না থাকায় বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম কমলেও সরকার গ্যাস সংগ্রহ করতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন জাপা চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হওয়ার আগে লোডশেডিং, ডলারের তীব্র দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি কেনার জন্য অর্থের অভাব এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মুখোমুখি হয়েছিল। ঠিক একই চিত্র এখন বাংলাদেশেও।
মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের (বিএইচআরসি) নির্বাহী সচিব মির্জা শাহাদাত হোসেন এবং বিএইচআরসির সাধারণ সম্পাদক (আন্তর্জাতিক বিশেষ প্রতিনিধি) গোলাম কিবরিয়া মোল্লা জিএম কাদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
বিদ্যুতের অভাবে শিল্প কারখানা চালু রাখা সম্ভব না হওয়ায় সব পণ্যের উৎপাদন কমে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জিএম কাদের।
এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেলে অনেকেই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো মেগা প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার আগেই বলেছিল সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তারা এখন বলছে নভেম্বরে স্বাভাবিক হবে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কবে স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না। তাই দেশের মানুষ সরকারের কথায় আস্থা রাখতে পারছে না’।
জিএম কাদের বলেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ‘সরকার সব ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন প্রতিটি ঘরে বেকারত্ব তৈরি করেছে। সরকারও প্রতি কেজি চাল ১০ টাকায় দেয়ার ঘোষণা দিলেও এখন প্রতি কেজি চাল ৭০ টাকা। জনগণ এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়।’
তিনি বলেন, বুধবার গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তবে হামলা ও মিথ্যা মামলার কারণে তার দলের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছেন না।
জাপা প্রধান আরো বলেন, ‘সরকারের সমর্থকরা নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে, কিন্তু তারা জাতীয় পার্টির লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করছে এবং তাদের সেই অপরাধের সাথে জড়িত করছে…আসলে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং মানুষ আর নির্বাচনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।’
সূত্র : ইউএনবি