দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে পাঁচজন, সিলেটে একজন, নওগাঁয় একজন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রংপুর
রংপুরের পীরগঞ্জে একটি ইটভাটায় বজ্রপাতে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বত্রিশ মাইল বিটিসি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কাবিলপুর সোনাতলা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার মিয়ার ছেলে আব্দুল জলিল মিয়া (৬৫), একই উপজেলার তিলকপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলাম (২২), চকনদী গ্রামের মো. শিরুল মিয়ার ছেলে সিয়াম মিয়া (২০), একই গ্রামের আলামিন মিয়ার ছেলে শাহাদাত মিয়া (২২) ও আয়তাল মিয়ার ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৮)।
ওসি আব্দুল আউয়াল জানান, বিকেলে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে বিটিসি এলাকার বকুল ব্রিকস নামে ইটভাটায় কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে পাঁচ শ্রমিক গুরুতর আহত হন। এর কিছু সময় পর ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান আরও এক শ্রমি
সিলেট
সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলায় বজ্রপাতে বদরুল আলম বদিল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বদরুল আলম বদিল উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের চিকাডহর গ্রামের মৃত ওয়াতির আলীর ছেলে।
ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াদ আলী বলেন, সোমবার দিবাগত রাতে বদরুল আলম মইটা টিলায় মাছ ধরতে যান সারারাত মাছ ধরে তিনি সকালে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়ি ফেরার পথে শাহ আরেফিন টিলায় বজ্রপাতের কবলে পড়েন বদরুল। পরবর্তীতে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নওগাঁ
নওগাঁর মান্দায় ধানের জমি দেখতে গিয়ে বজ্রপাতে সুজাদ হোসেন (৩০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের বুজরকান্তপুর গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সুজাদ হোসেন বুজরকান্তপুর গ্রামের (পূর্বপাড়ার) চান্দু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির পানি ধানক্ষেতে জমেছে কিনা সেটা দেখার জন্য সুজাদ দুপুর ২টার দিকে গ্রামের পাশে ধানের জমিতে যান। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
মহাদেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে মোসা. মাসেদা বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৃষ্টির সময় গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাত হলে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তিনি সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকেলে বৃষ্টির সময় বাড়ির সামনে সংসারের কাজ করছিলেন মাসেদা বেগম। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
মাসেদা বেগমের স্বজন আশরাফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিকেলে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে বাড়ির সামনের জ্বালানি খড়িসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র গুছিয়ে আনার কাজ করছিলেন মাসেদা বেগম। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. মৌদুদ আলম খাঁ জানান, মরদেহ দাফনের জন্য মৃতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।