বন ধ্বংসের পেছনেই বন বিভাগ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


টাকা পেলেই গাছ কাটা, বনের ভেতর ঘর নির্মাণসহ চলে অবৈধ কর্মকাণ্ড। টেন্ডার ছাড়াই উডলট প্লটের গাছ কাটার অভিযোগও রয়েছে। গাজীপুরে সরকারি বন যারা রক্ষা করবে, তারাই অর্থের বিনিময়ে ধ্বংস করছে এমনটাই জানান অভিযোগকারীরা।

প্রতিবন্ধী তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে টেনেটুনে চলে বৃদ্ধ ওয়াদ আলীর সংসার। তাদেরও একটি নতুন ঘর নির্মাণে দিতে হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। বাধ্য হয়ে পালের গরু বিক্রি করে স্থানীয় বন বিভাগের বাধা পাড়ি দিতে হয়।

এমন অসংখ্য ঘটনা চাপা পড়ে আছে কালিয়াকৈর উপজেলার কাচিঘাটা সদর বিট এলাকায়।

স্থানীয় এক নারীর অভিযোগ, ঘর করতে গেলে বন বিভাগ থেকে বলা হয় টাকা লাগবে। দৌড়ে ফরেস্ট অফিসে গেলাম, তখন তারা বলেন, মানুষ আমার হাতে নাকি অন্যজনকে টাকা দেয়; যখন তারা দেবে তখন ঘর দেখাব।

স্থানীয়রা বলছেন, বন রক্ষাকারী এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাহিদা মেটালে সবই সম্ভব ছলঙ্গা, পদ্যপাড়া, তালচালা, মুথাপাড়া কাচিঘাটাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সরকারি বনের ভেতর টাকার বিনিময়ে নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। সৃজিত বনায়নের প্লট বরাদ্দ দিতেও উপকারভোগীর কাছ থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু কর্মকর্তারা। অভিযোগ উঠেছে, টেন্ডার ছাড়াই দুই উপকারভোগীর প্লটের গাছ কেটে ফেলারও।

সম্প্রতি কাচিঘাটা রেঞ্জের সদর বিটের ফরেস্টার ইউনুস ও গার্ড ফরিদ মোল্লার নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

এদিকে গাজীপুরের বন রক্ষায় উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় ভাওয়ালগড় বাঁচাও আন্দোলনের নেতা।

গাজীপুর ভাওয়ালগড় বাঁচাও আন্দোলনের মহাসচিব একেএম রিপন আনসারী বলেন, এ অবস্থায় উচ্চ আদালত যদি বিশেষ কোনো নির্দেশনা দিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এ বনকে রক্ষা করেন; এ ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।

একাধিকবার কাচিকাটা রেঞ্জ অফিসে গিয়েও দায়িত্বশীলদের নাগাল পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।

ঢাকা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, যে নিচ্ছে সে তো অপরাধী, যে টাকা দিচ্ছেন তাকেও ধরব। ছবি যদি যদি পারেন গোয়াসঅ্যাপে দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

বন বিভাগের তথ্যমতো, কাচিঘাটা রেঞ্জে বর্তমানে ৯ হাজার ৬৯০ একর বনভূমি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *