ময়মনসিংহে দর্শনার্থীদের বেশ নজর কাড়ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। জাতির পিতার বেড়ে ওঠা ও কর্মময় জীবনের ধারাবাহিক ১২টি পর্ব নিয়ে সাজানো হয়েছে এ জাদুঘর। বৃহস্পতিবার থেকে চালু হওয়া এর প্রদর্শনী চলবে আগামী সোমবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত এ জাদুঘর।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের অজানা তথ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে রেলওয়ে দৃষ্টিনন্দন জাদুঘর সাজিয়েছে। এতে প্রবেশ করেই দর্শনার্থীরা পরিচিত হবেন জাতির পিতার শৈশবের দিনগুলোর সঙ্গে। পর্যায়ক্রমে তার ছাত্রজীবন, বেড়ে ওঠা, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠা, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তার অবদান, অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ সম্পর্কে দর্শনার্থীরা জানতে পারছেন।
এছাড়া মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের করুণ চিত্র, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম, বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত হতে পারছেন দর্শনার্থীরা। এখানে প্রদর্শন করা প্রতিটি কনটেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে ভিডিও এবং স্থিরচিত্রের সমন্বয়ে।
কোচের এক প্রান্তে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ এবং থিম সংসহ বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত গান প্রচার করা হচ্ছে। জাদুঘরটিতে রয়েছে জয় বাংলা স্লোগানের আদলে তৈরি একটি বুক সেলফ। যেখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত ও তার কর্মজীবনের ওপর লিখিত গুরুত্বপূর্ণ বই। এছাড়া রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত বিভিন্ন শিশুতোষ সাহিত্যকর্ম। জাদুঘরে তৈরি করা হয়েছে ফুলের বাগান।
সুদৃশ্য ১২টি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে জাতির পিতার পৈতৃক নিবাসের প্রতিরূপ, তার ব্যবহৃত চশমা, পাইপ, মুজিব কোট, টুঙ্গিপাড়ার সমাধিস্থলসহ ১৩টি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এছাড়া রয়েছে দেশের স্বাধীনতা ও গৌরবের প্রতীক জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ মুক্তি সংগ্রামের দুর্লভ সব চিত্র। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লেখা চিঠি। জাদুঘরের বহিরাবরণ সজ্জিত করা হয়েছে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রাম চিত্রিত হয়েছে ম্যুরালের মাধ্যমে।
দর্শনার্থী সুমাইয়া ইয়াসমিন জানান, তিনি রেলস্টেশনে ঘুরতে এসেছিলেন। এসে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরের কথা জেনে তা ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে মানুষকে জানাতে এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনের সুপার জাহাঙ্গীর আকন্দ জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতি সম্মান জানাতেই ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, জীবনাদর্শ, জাতির জন্য তার আত্মত্যাগ ও অবদানকে শহর থেকে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এ উদ্যোগ।