রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা মহিলা দলের সদস্য সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে (৩৫) গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দিনে-রাতে কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা নেই। সোনিয়া আক্তার স্মৃতি একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে সত্য উচ্চারণের কারণেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সরকার বিচলিত হয়ে ওঠে। কারণ সকল অন্যায় ও অপকর্মের হোতাই হচ্ছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার
তিনি বলেন, সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে পুলিশ যেভাবে গ্রেপ্তার করেছে তা অমানবিক, অসভ্যতার এক নজিরবিহীন ঘটনা। গভীর রাতে তার বাসায় যেভাবে পুলিশ হানা দিয়েছে তা একাত্তরের হানাদার বাহিনীর বর্বরতার সমতুল্য। সোনিয়া আক্তার স্মৃতি বারবার কাকুতি-মিনতি করে বলেছে- ‘আমার দুটি ছোট বাচ্চা আছে, আপনারা এত রাতে আসছেন কেন, গ্রেপ্তার করলে দিনে আসুন’। কিন্তু তারপরও পুলিশ কোনো কথা শোনেনি। সন্ত্রাসী কায়দায় তখনি তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সোনিয়ার দুটি ছোট বাচ্চার আহাজারিতেও পুলিশের মন গলেনি। বর্তমান সরকারের আমলে নারীর ওপর এহেন আচরণ আরেকটি কুৎসিত দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অবিচার ও অন্যায় চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আইন রক্ষকরাই এখন জনদুশমনে পরিণত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে সোনিয়া আক্তার স্মৃতির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজবাড়ী জেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যসচিব সামসুল আরিফিন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
সোনিয়া আক্তার স্মৃতি রাজবাড়ী পৌর এলাকার ৩নং বেড়াডাঙ্গার প্রবাসী মো. খোকনের স্ত্রী। তিনি রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। এজন্য এলাকায় তিনি রক্তকন্যা হিসেবে খ্যাতি পান।
মামলার বাদী সামসুল আরিফিন চৌধুরী জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি বিতর্কিত পোস্ট দেন। তখন তিনি তার প্রোফাইল ঘেঁটে দেখেন তার আগে ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করে আরেকটি পোস্ট দিয়েছিলেন স্মৃতি।
তিনি আরও জানান, আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠকর্মী হিসেবে এই পোস্ট তাকে ব্যথিত করেছে। যে কারণে সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজবাড়ী সদর থানায় স্মৃতির নামে অভিযোগ করেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ওই এজাহার বুধবার মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।