কাউকে অপহরণ করলে সাথে এত জিনিস থাকার কথা নয় : পিবিআই

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


খুলনা নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধারের সময় একটি শপিং ব্যাগ পেয়েছে পুলিশ। এতে থাকা বিভিন্ন জিনিস দেখে পুলিশের কাছে মনে হয়েছে, তাকে অপহরণ করা হয়নি। তবে এটা একবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের বক্তব্য বলে জানিয়েছে পিবিআই।

রহিমা বেগমকে আজ রোববার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের হাজী মহসিন রোডে পিবিআই খুলনার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

ব্রিফিংয়ে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো মামলাটির তদন্ত করছি। তবে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, তার কাছ থেকে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না ছিল, হিজাব ছিল, আয়না, শাড়ি, আইড্রপ, ওষুধ ছিল। তার পরিধেয় সালোয়ার-কামিজ ছিল, সাথে ছোট একটি অর্নামেন্টাল পার্টস ছিল। স্বাভাবিকভাবে একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা নয়। তবে আমরা একবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। আমরা বিস্তারিত তদন্ত শেষে আপনাদের সবকিছু জানাব। তবে আপাতদৃষ্টিতে এটা অপহরণ না-ও হতে পারে।’

তিনি বলেন, রহিমা বেগম সুস্থ আছেন। তবে একটু ভীত বলে মনে হচ্ছে। তিনি কী কারণে নিখোঁজ হয়েছিলেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল নাকি আত্মগোপন করেছিলেন সে ব্যাপারে কিছুই বলছেন না। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। বিস্তারিত জানার পর সাংবাদিকদের জানাতে পারব।

রহিমা বেগমের নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া ময়মনসিংহে অজ্ঞাতনামা নারীর লাশকে নিজের নিখোঁজ মা রহিমা বেগমের বলে দাবি করায় প্রশাসন বিভ্রান্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগম অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ছয়জনের বিষয়ে আদালতে সিদ্ধান্ত হবে। এ ছাড়া রহিমার সাথে ফরিদপুর থেকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া আরো তিনজনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তবে নিরপরাধ কাউকে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত করা হবে না। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আদালত থেকে হবে।

এর আগে সকালে রহিমা বেগমকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে নেয়ার সময় দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক দোলা দে বলেন, রহিমা বেগম তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি সন্তান ও স্বামীর কাছে যেতে চান না। তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান সকালে দেখা করতে এলেও দেখা করতে চাননি। রহিমা বেগম পরে দেখা করলেও তাদের সাথে কথা বলেননি।

গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। এর পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করে আসছিলেন তার সন্তানেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *