বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে। স্থানীয় বাজারে কিছুটা কমেছে স্বর্ণের দর। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে কমেছে, দেশের বাজারে সেই হারে কমেনি। বরং চলতি মাসে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমের দিকে ছিল, সে সময়ও দেশের বাজারে উল্টো বাড়ানো হয়।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমছেই। আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণ ২৯ ডলার বা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬৪৩ ডলার ৯০ সেন্টে নেমে এসেছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দর টানা পড়ছে। এই দর দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মূল্যবান এই ধাতুটির দাম ১ হাজার ৬৫০ ডলারের নিচে নেমে এসেছিল।
তবে বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দর কমছে, দেশের বাজারে সে হারে কমছে না। এমনকি পড়তির বাজারেও স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হলেও দেশের বাজারে কেনো কমছে না এ প্রশ্নের উত্তরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের দেশীয় বাজারে গোল্ডের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে গোল্ড আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। প্রথমে কয়েকজন কিছু আমদানি করলেও এখন আর কেউ করে না। কারণ শুল্ক, ভ্যাটসহ আমদানির খরচ অনেক বেড়ে যায়। সে দামে বিক্রি করলে স্বর্ণের ভরি ৯০ হাজার টাকা বেশি হবে। অন্যদিকে এখন ব্যাগেজ রুলসের আওতায়ও কম গোল্ড আসছে।’
আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আগস্টের মাঝামাঝি থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমছে। গত ১২ আগস্ট প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮০১ ডলার ৮২ সেন্ট। সেখান থেকে কমতে কমতে এখন ১ হাজার ৬৫০ ডলারেরর নিচে নেমে এসেছে। এ হিসাবে দেড় মাসের কম সময়ের মধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ১৫৮ ডলার।
গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ৩১ ডলার ৬৬ সেন্ট। এক মাসের ব্যবধানে কমেছে ১০৮ ডলার বা ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সম্প্রতি দুই দফা দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর মধ্যে সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৮২ হাজার ৩৪৮ টাকা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৮ হাজার ৬১৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ৭০০ টাকা কমিয়ে ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫৮৩ টাকা কমিয়ে ৫৫ হাজার ৮৭১ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই বিক্রি হচ্ছে এই ধাতু।