ঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে আটক এক তরুণীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভে ফুঁসছেন ইরানের মানুষ। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবারও বড় বিক্ষোভ হয়েছে ইরানজুড়ে। তবে হিজাব পরার দাবিতে পাল্টা বিক্ষোভ করেছেন দেশটির সরকারপন্থীরাও।
এদিকে ইরানের সেনাবাহিনী বলেছে, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা ‘শত্রুদের মোকাবিলায়’ নামবে। অন্যদিকে ইরানের ‘নীতি পুলিশের’ ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কুর্দিস্তান প্রদেশ থেকে রাজধানী তেহরানে আসেন। ‘অসভ্য’ পোশাক পরার অভিযোগে ইরানের নীতি পুলিশ মাশাকে আটক করে। পরে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। তখন ইরানের কর্তৃপক্ষ দাবি করে, আটক কেন্দ্রে অবস্থানের সময় তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মাশার মৃত্যুর পর ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নাগরিকেরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তারা মাশা আমিনির মৃত্যুর ন্যায়বিচার দাবি করেন। তারা ইরানের কর্তৃপক্ষ ও নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গ্রেপ্তার ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে কিছু নারী জনসমক্ষে চুল কেটে ও হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, মাশার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির অন্তত ৫০টি শহরে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে এক হাজার বিক্ষোভকারীকে।
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিতে হয়েছে ইরানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকে। এক বিবৃতিতে বাহিনীটি বলেছে, ‘এ ধরনের মরিয়া কর্মকাণ্ড হচ্ছে ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করতে শত্রুদের শয়তানি কৌশলের অংশ। অন্যায়ভাবে আক্রমণের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিতে শত্রুদের বিভিন্ন চক্রান্ত মোকাবিলা করব আমরা।’