প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেছে। বিএনপি- জামায়াত সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, দিয়েছে গুলি।’৯৩ দিন হরতাল- অবরোধ করেছে বিএনপি- জামায়াত। এই ৯৩ দিনে খালেদা জিয়ার তো কোনো ক্ষতি হয় নাই| তিনি তো ৬৩ জন লোক নিয়ে কার্যালয়ে বসে বসে খেয়েছেন।
শনিবার চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা সরকারি মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি সরকারের আমলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত আপনাদের বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, দিয়েছে গুলি। বিদ্যুতের জন্য আপনারা আন্দোলন করায় তারা আপনাদের উপর গুলি চালিয়েছিল। সেদিন ১৮ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা করে তারা।’
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বিদ্যুৎ দিতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ দিলে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়ে ধ্বংস করে। বিএনপি মানেই ধ্বংসের রাজনীতি করা। জামায়াত মানেই ধ্বংসের রাজনীতি করা। তারা মানুষের ধ্বংস করতে পারে। এদের মতো জঘন্য রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষ আর দেখে নাই।’
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রায় তিন মাস বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় নাশকতায় আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারা, গাড়ি জ্বালানো ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ হত্যা করাই তার (খালেদা) চরিত্র। বিএনপি মানে ধ্বংস, জামায়াত মানে ধ্বংস। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে খালেদা জিয়া আন্দোলনের ডাক দিলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারলেন। ৯৩ দিন হরতাল- অবরোধ করেছে বিএনপি- জামায়াত। এই ৯৩ দিনে খালেদা জিয়ার তো কোনো ক্ষতি হয় নাই। তিনি তো ৬৩ জন লোক নিয়ে কার্যালয়ে বসে বসে খেয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে আমার কৃষকের, আমার দিনমজুরের।’
সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি, ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তি কোনোটাই বিএনপি-জামায়াত বাস্তবায়ন করাতে পারেনি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমস্যা সমাধান করতে পারেনি।’ বিএনপি পারেনি কেন- প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ বিএনপি না পারলেও আওয়ামী লীগ ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমস্যা সমাধান করতে পেরেছে।’
ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনকে ‘বাংলাদেশের বিরাট অর্জন’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য অধিকার আদায় করে। আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি তখনই ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য অধিকার আদায় করেছি। কিন্তু বিএনপি বিরোধী দলে থাকলে মুখে ভারত বিরোধীতা করে আর গোপনে ভারতের চাটুকারিতা করে।’
এর আগে শনিবার দুপুর ১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর ওপর নির্মিত ‘শেখ হাসিনা সেতু’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি চাপাইনবাবগঞ্জে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা শহরের রাস্তাঘাট মেরামতসহ চলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। জেলাজুড়ে উৎসবের আমেজে প্রধানমন্ত্রীকে বরণের জন্য অপেক্ষা করেন সাধারণ মানুষ।