কয়েকদিন নিম্নমুখী থাকার পর অপরিশোধিত (ক্রুড) জ্বালানি তেলের দাম আবার বেড়েছে। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেল বিক্রি হয়েছে ৯১ দশমিক ৩৫ ডলারে; আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের বিক্রয়মূল্য ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮৫ দশমিক ১১ ডলার।
তবে বাজার বিশ্লেষকরা আশা করছেন, শিগগিরই তেলের বাজারে আবার দাম কমবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, আগের দিন শুক্রবারের (১৬ সেপ্টেম্বর) তুলনায় শনিবার ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ৫১ সেন্ট, ডব্লিউটিআই তেলের দাম ব্যারেলে বেড়েছে ১ সেন্ট। শতকরা হিসেবে এ দুই ধরনের বেঞ্চমার্কের দাম বেড়েছে ২ শতাংশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল বসরায় যান্ত্রিক গোলযোগ শুরু হওয়ায় দেশটিতে তেলের সরবরাহ কমে গেছে। তার প্রভাবেই শুক্রবার খানিকটা বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম। ইতোমধ্যে সেই যান্ত্রিক গোলোযোগ মেরামত করা হয়েছে।
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম উঠানামা করছিল। সম্প্রতি তেলের বাজরের মন্দাভাবের বড় কারণ হিসেবে ডলারের মানের লাগামহীন বৃদ্ধিকেই দায়ী করা হয়।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার প্রায় সম্পূর্ণ ডলারনির্ভর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত অপরিশোধিত তেলের যাবতীয় আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পন্ন হতো ডলারে।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী। এরপর ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।
এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অবশ্য বৈশ্বিক বাজারে খানিকটা পরিবর্তন আসে। ইউক্রেন অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে পুতিন ইউরোপে গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে ইউরোপে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সৃষ্টি হয়।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে জাতীয় অর্থনীতিকে বাঁচাতে নিজেদের মুদ্রা রুবলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত লেনদেনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার অর্থনীতিতে এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রভাব ফেলতে না পারায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছেন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে আগামী বছরের প্রথম দিকে নিষেধাজ্ঞার ‘কঠোরতম প্রভাব’ দৃশ্যমান হতে পারে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তারা।
গত কয়েক মাস ধরে বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলারের মান লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডলারে লেনদেন করা বিভিন্ন মার্কিন ও আন্তর্জাতিক ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে নিজেদের ডলারের মজুত বাঁচাতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে অপরিশোধিত তেলের ছোট-বড় বহু ক্রেতা দেশ।