আ জ ম নাছির উদ্দিন ও মোহা. আব্দুল জলিল মন্ডল
চট্টগ্রাম: নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে আবারও ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নেমেছেন সিএমপি কমিশনার মোহা. আব্দুল জলিল মন্ডল। এবার তিনি সঙ্গে পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকেও।
শনিবার সকাল ১০টায় নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানের ফটক থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করে নগর পুলিশ। কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মেয়র।
কর্মসূচিতে নগর পুলিশ কমিশনার মোহা. আব্দুল জলিল মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম শহীদুর রহমান ও বনজ কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে এক হাজার পুলিশ অংশ নেন। নগর পুলিশের উপ-কমিশনার থেকে ওসি পর্যন্ত কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল জানান, প্রথমদিন নগরীর বিভিন্ন সড়কে দু’ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করবে পুলিশ। এরপর থেকে থানায় থানায় ওসিদের নেতৃত্বে চলবে কর্মসূচি।
সিএমপি কমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, আমরা নগরবাসীকে ৩১ মে পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এসময়ের মধ্যে সবাই যার যার বাড়ি, দোকানের সামনের নালা পরিষ্কার করুন, আবর্জনা অপসারণ করুন। থানার ওসি’রা এ কার্যক্রম মনিটর করবে।
তিনি বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। কিন্তু আমরা এ শহরের নান্দনিক সৌন্দর্য রক্ষা করতে চাই। আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ যে কোন জনমঙ্গলের কাজে মেয়রকে সহযোগিতা দিতে চাই।
মন্ডল মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার আইনসম্মত প্রতিটি নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। যেখানেই আপনি জনমঙ্গলের কাজ করবেন সেখানেই আপনি আমাদের পাবেন।’
এরপর মেয়র ও পুলিশ কমিশনার মিলে নগরীর কিছু আবর্জনা অপসারণ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেন।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি উদ্বোধনের জন্য জমিয়াতুল ফালাহ’র সামনে সড়কের একপাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগ দেন আব্দুল জলিল মন্ডল। চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ২৪ অক্টোবর থেকে ঝাড়ু হাতে অভিযানে নামেন মণ্ডল।
জলিল মন্ডলের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চট্টগ্রামজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে। পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেমে পড়ে।
কিন্তু গত জানুয়ারিতে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন শুরু হলে এ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। সহিংসতা মোকাবেলায় ব্যস্ত পুলিশের পক্ষে পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আন্দোলনের পর আসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ব্যস্ত হয়ে পড়ে পুলিশ।
জলিল মন্ডলের অভিযান যখন তুঙ্গে তখন পরিচ্ছন্নতার ঝাড়ুকে ন্যায়দণ্ডের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছিলেন তিনি।
গত ৮ ডিসেম্বর বাকলিয়া থানায় ওপেন হাউস ডে ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, সমাজের ৯৫ শতাংশ মানুষ ভাল। পাঁচ শতাংশ মানুষ খারাপ।
ন্যায়দণ্ডের ঝাড়ু দিয়ে ঝেটিয়ে তিনি সেই পাঁচ শতাংশ মানুষকে চট্টগ্রাম থেকে বিদায় করার কথা বলেছিলেন।
এবারও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করে জলিল মন্ডল বলেন, ‘শহর পরিস্কারের সঙ্গে সঙ্গে আমরা অপরাধীদেরও উপড়ে ফেলতে চাই। এ কাজে আমরা মাননীয় মেয়রেরও সহযোগিতা চাই।’