বরগুনা একটি নদীবেষ্টিত জেলা। এ জেলার সঙ্গে উপজেলাগুলোর যোগাযোগের জন্য এখন পর্যন্ত নির্মিত হয়নি কোনো সেতু। ফলে সন্ধ্যার পরই জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলাগুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। আবার বৈরি আবহাওয়ার সময় দিনেও উপজেলা শহরের মানুষ জেলা শহরে যেতে পারে না।
জানা গেছে, পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীবেষ্টিত জেলা বরগুনা। এ জেলার ছয় উপজেলার মধ্যে বেতাগী উপজেলা ছাড়া অন্য উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে নদীগুলো। এর মধ্যে দুই উপজেলায় যোগাযোগের জন্য রয়েছে ফেরি সার্ভিস। তবে ফেরি চলাচলে দেরি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়।
এদিকে রাত ৮টার মধ্যে ফেরি ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জনগণের ভোগান্তি ১২ মাসই থাকে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে দিনেও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে রোগী নিয়ে বা খুব প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও উপজেলা শহর থেকে জেলা শহরে প্রবেশ করতে পারছেন না কেউ।
বাইনচটকি-বড়ইতলা রুটের টুকু মিয়া, নয়ন, খলিলসহ কয়েকজন যাত্রী বলেন, ফেরির কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। তাছাড়া ফেরি পারাপারে সময় লাগে অনেক। তাই ট্রলারই ভরসা। দফায় দফায় ভাড়া বাড়ানোর পরও বাধ্য হয়ে ট্রলারেই পারাপার হতে হচ্ছে। এখানে একটা ব্রিজ হলে আমাদের কষ্ট কম হতো।
এনায়েত হোসেন নামে আমতলী-পুরাকাটা রুটের এক যাত্রী বলেন, আমার বাসা বরগুনায়। আমতলীর একটা স্কুলে শিক্ষকতা করি। তাই রোজ এই পথে যাওয়া-আসা করতে হয়। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ ট্রলারে পারাপার করছে। এদের কোনো নিরাপত্তা নেই। পায়রা নদীর এই স্থানে একটা ব্রিজ এখন সময়ের দাবি।
চালিতাতলী-বগী রুটের কয়েকজন যাত্রী বলেন, আমতলী, পাথরঘাটার মানুষ ফেরিতে চাইলেও যেতে পারে। কিন্তু আমাদের একমাত্র ভরসা হলো ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। নদী মোহনা হওয়ায় এই রুটে সব সময়ই নদী উত্তাল থাকে, তবুও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয়। সন্ধ্যার পর তো ট্রলারও পাওয়া যায় না। এখানে ব্রিজ হলে আমরা সাধারণ মানুষ উপকৃত হবো, পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, পায়রা এবং বিষখালী নদীতে ব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি। আমরা বিষখালী নদীর বড়ইতলা-বাইনচটকি এবং পায়রা নদীর আমতলী-পুরাকাটা রুটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সেতু মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।