বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারত সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশকে নষ্ট করছে। তারা নিজেদের মধ্যেও অস্ত্রবাজি ও সংঘাত করছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা ভারতকে বলেছি। ভারত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ইতিবাচক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারকে নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আসবে। এতে করে তেল পরিবহনের খরচ অনেকটা কমে যাবে।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ১৩১ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ১২৬ এবং ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন ভারত সরকারের অর্থায়নে নির্মাণকাজ চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কম নয়। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের চারদিকে ভারত। সেই দেশ থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য, কৃষি, যোগাযোগ, সব বিষয়ে সহযোগিতা আমরা পাই। এমনকি পাইপ লাইনে করে তেল নিয়ে এসেছি। একেবারে শূন্য হাতে এসেছি, বলা যাবে না।
সরকারপ্রধান বলেন, সফরে ভারতের যথেষ্ট আন্তরিকতা আমি পেয়েছি। বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের সব দল সবসময় এক থাকে। একাত্তরে যেমন সব দল সমর্থন দিয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা দেশের সঙ্গে সমস্যা থাকতেই পারে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। আমাদের নীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর চার দিনের সফরে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এ ছাড়া ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গেও পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা।
সফরে যেসব বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে- অভিন্ন নদী কুশিয়ারা থেকে পানি প্রত্যাহার, ভারতে বাংলাদেশের রেলকর্মীদের প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ রেলওয়ের আইটি সিস্টেমে ভারতের সহযোগিতা, ভারতে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল অফিসারদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে ভারতের কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) ও বাংলাদেশের কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের (বিসিএসআইআর) মধ্যে সমঝোতা, মহাকাশপ্রযুক্তিতে সহযোগিতা এবং প্রসার ভারতী ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মধ্যে সম্প্রচার সহযোগিতা।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পায়।