৪ সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতরা

Slider সারাবিশ্ব

75361_us

থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রে ভাসমান বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা অভিবাসীদের জীবন বাঁচানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে তাদের আশ্রয় দেয়া এবং সহযোগিতা করার উপায় খুঁজতে দেশ তিনটির সরকারসমূহকে একত্রিত করতে কাজ করছেন দেশগুলোতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতরা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নিয়মিত প্রেস-ব্রিফিংয়ে গতকাল অভিবাসী সঙ্কট সমাধান ও মানবপাচার প্রসঙ্গ উঠে আসে। সমুদ্রে ভাসমান বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের জন্য কিভাবে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র, এমন প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি-মুখপাত্র জেফ রাথকে। নিচে সংবাদ-সম্মেলনের বাংলাদেশ অংশটুকু তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: এশিয়ায় এ বোটগুলোতে যে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশীরা আছেন, তাদের সাহায্যের জন্য কি করা হয়েছে বা হয়নি সে ব্যাপারে আপনার কাছে নতুন কোন তথ্য আছে কি? কেউ তাদের আশ্রয় দিতে চায়, তেমনটা প্রতীয়মান হচ্ছে না।
ডেপুটি-মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): আমরা পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। আমরা ওই অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোকে সমুদ্রে (ভাসমান মানুষদের) জীবন বাঁচানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই। এটা অত্যন্ত জরুরি আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ, যা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও সামুদ্রিক আইন অনুসারে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আঞ্চলিকভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন। আমরা সমস্যায় পতিত সরকার, ইউএন হাই কমিশনার ফর রেফ্যিউজিস (ইউএনএইচসিআর), ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছি। জীবন বাঁচানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। ওই অঞ্চলের সরকারসমূহ বহু রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় আমরা তাদের প্রশংসা করি এবং সেটা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আমরা তাদের কাছে আহ্বান জানাই। এ ইস্যুগুলোতে একটি আঞ্চলিক সম্মেলন আহ্বানে থাই সরকারের প্রয়াসেরও প্রশংসা করি আমরা। আগামী ২৯শে মে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু, এ মুহূর্তে জীবন বাঁচানোই অগ্রগণ্য বিষয়। তাই এ দেশগুলোতে আমাদের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতরা সরকারগুলোকে একত্রিত করছেন অভিবাসীদের সহযোগিতার উপায়গুলো আলোচনার মাধ্যমে বের করতে, যাতে করে সে লক্ষ্য অর্জিত হয়।
প্রশ্ন: সুনির্দিষ্টভাবে কোন দেশের রাষ্ট্রদূতরা সভা আয়োজন করতে চান। আমরা কি মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার ব্যাপারে আলোচনা করছি?
ডেপুটি-মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): হ্যাঁ, অবশ্যই ওই দেশগুলোই, যারা অভিবাসী সমস্যায় পড়েছে। আমরা বার্মা (মিয়ানমার) সরকারের কাছেও এ ইস্যুগুলো উত্থাপনের বিষয়টি অব্যাহত রেখেছি। কারণ, অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে যে, রাখাইন রাজ্যে জরুরি ভিত্তিতে আক্রান্তদের জীবনযাপনের মান, মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার অঙ্গীকার পূরণ করা প্রয়োজন। সুতরাং, আমরা সংশ্লিষ্ট সব সরকারের কাছে ইস্যুটি উত্থাপন করছি।
প্রশ্ন: এর আগে বহু অভিবাসীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য আপনি এ দেশগুলোর প্রশংসা করেছেন। কিন্তু, সমুদ্রে মূলত মানব প্রাণ ভাসছে এবং এ মুহূর্তে কেউ তাদের আশ্রয় দিতে ইচ্ছুক নয়, এ বিষয়টি কি আপনার কাছে হতাশাব্যঞ্জক মনে হয় না?
ডেপুটি-মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): বেশ কিছু মানুষকে প্রবেশ করতে ও আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তাই আমরা বিষয়টির প্রশংসা করি। তবে আপনি ঠিক বলেছেন যে, বহু জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আর সে কারণে আমরা মনে করি জীবন বাঁচানোর বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচ্য হওয়া উচিত। দেশগুলোর উপকূলের কাছে সমুদ্রে ভাসমান এ মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে আমরা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।
প্রশ্ন: আর একটি মাত্র প্রশ্ন–
ডেপুটি মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): হ্যাঁ।
প্রশ্ন: আমার শেষ প্রশ্ন এ বিষয়ে। আপনি গতকাল বলেছিলেন, এ মানুষগুলোকে উদ্ধার করতে এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র কোন উদ্ধার অভিযান পরিচালনাক করবে না।
ডেপুটি মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): ঠিক বলেছেন।
প্রশ্ন: আমার মনে হয়, সে সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে।
ডেপুটি মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): সে সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে।
প্রশ্ন: সেটাই বহাল থাকছে–
ডেপুটি মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): এটা আঞ্চলিক বিষয়। সংক্ষেপে বলতে গেলে, এর আঞ্চলিক সমাধান প্রয়োজন।
প্রশ্ন: কেউ যদি এগিয়ে আসতে না চায়, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসার আকস্মিক কোন পরিকল্পনা আদৌ আছে কি?
ডেপুটি মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত): না, সে ধরনের কোন পরিকল্পনা আমার কাছে নেই, যা আমি আপনাকে পড়ে শোনাতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *