সারাদেশে বজ্রপাতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব মৃত্যুর খাবার পাওয়া যায়।
কুষ্টিয়ার মিরপুর ও ভেড়ামারায় বজ্রপাতে আশরাফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
সকালে ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর ও মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামের ফজলু মাতবরের ছেলে আশরাফুল এবং মিরপুরের ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম এলাকার জবেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্ব স্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
পাবনা
পাবনার ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ায় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে আলাদা স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় তারা মারা যান।
নিহতরা হলেন, ঈশ্বরদী পৌরসভার ফতেমোহাম্মদপুর এলাকার মৃত হোসেন উদ্দিন ফকিরের ছেলে কৃষক আইন উদ্দিন (৭০)। তিনি রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন। অপরজন আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের কাকমারি গ্রামের মহির উদ্দিন মোল্লার ছেলে সাদেক হোসেন মোল্লা (৩৮)।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, সকাল নয়টার দিকে ফতেমোহাম্মদপুর এলাকায় বাড়ির সামনে পুকুরে পাট ধোয়ার কাজ করছিলেন কৃষক আইন উদ্দিন। এ সময় বজ্রপাত হলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল দশটার দিকে উপজেলার কাকমারি গ্রামে বাড়ির পাশে দলগাড়ি বিলে ধানের জমিতে আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছিলেন কৃষক সাদেক হোসেন। এমন সময় তার ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
শেরপুর
শেরপুরের নকলায় আলাদা আলাদা জায়গায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার উরফা ইউনিয়নের হাসনখিলা এলাকা ও উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রেহারচর এলাকায় এ সব ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, হাসনখিলা এলাকার মন্নেস আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম অপি ও রেহারচর এলাকার মৃত সিদ্দিক সরকারের ছেলে নাজমুল হক।
উরফা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম তালুকদার ভুট্টো জানান, কৃষক রফিকুল ইসলাম অপি তার ভাইদের নিয়ে আমন ধান রোপণের জন্য সকালে বাড়ির পাশের বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলতে যায়। এসময় হঠাৎ বজ্রপাতে আহত হন তিনি। পরে তাকে সেখান থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, আলাদা ঘটনায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আরও একজন নিহত হয়েছেন।
নিহতে ভাই মোজাম্মেল হক কালা মিয়া জানান, সকালে বৃষ্টির সময় নদীতে মাছ ধরার জন্য নাজমুল হক বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে তার বড় ভাই মোজাম্মেল হক কালা ওই গ্রামের সাবেক মেম্বার সফর উদ্দিনের পুকুর পাড় থেকে মৃত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুশফিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে আবু বকর (১৫) নামের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের পূর্ব টাঙ্গাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আবু বকর ওই এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে। সে পাটকা দামপাড়া উচ্চবিদ্যালয় ১০ম শ্রেণিতে পড়তো।
ধোবাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জালাল উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাটোর
নাটোরের সিংড়ায় বজ্রপাতে ফাতেমা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের তালঘড়িয়া গ্রামের আ. মান্নানের স্ত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টির মধ্যেই গৃহবধূ ফাতেমা বেগম বাড়ির হাঁস নিয়ে মাঠে যায়। অনেক সময় পার হওয়ার পরেও বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে বাসায় নিয়ে আসে। পরে স্থানীয় চিকিৎসক তাকে বলে মৃত ঘোষণা করেন।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।