বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে ফরিদপুরে দায়ের করা মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় গত ৩১ আগস্ট ফরিদপুরের ৩ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে করা মোট ৮টি মামলায় আগাম জামিন পেলেন জাহাঙ্গীর আলম।
সোমবার জাহাঙ্গীর আলম আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।
আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহমেদ।
এর আগে গত ৪ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের হওয়া ৭ মামলায় জাহাঙ্গীর আলম আগাম জামিন পান। ওইদিন পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জে দায়ের করা মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন।
ফরিদপুরেও যে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেটি জানতেন না জাহাঙ্গীর। তার দাবি, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি বিষয়টি জেনেছেন।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
জাহাঙ্গীরের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুল জারি করেন।
স্থানীয় সরকার সচিব, সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ওইদিন আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মশিউর রহমান সবুজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যে অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আগেও একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। তখন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে গাজীপুরের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ১৯ নভেম্বর তাকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল— তার বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতি বছর হাটবাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।