ফের বাড়লো পদ্মাসেতুর ব্যয়, সময় বেড়ে ২০২০

Slider জাতীয়

Padma_berzsm_227571383
ঢাকা: আবারও ব্যয় ও সময় বাড়লো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের। অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাবের (ডিপিপি) তুলনায় দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে ৮ হাজার ২শ ৮৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের মোট ব্যয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭শ ৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকায়।

জানুয়ারি ২০০৯ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২০১৮ সাল। তবে নতুন বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে পদ্মাসেতু প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সময় এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১০ হাজার ১শ ৬১ কোটি টাকা।

প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫শ ০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। এরপর ফের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ালো ২৮ হাজার ৬শ ৫১ কোটি ৫৫ লাখ টাকায়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) ২৭ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা ১ হাজার ৩শ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত ডিপিপির তুলনায় ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ।

ফের পদ্মাসেতুর ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম  বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। আমি মিটিংয়ে যাচ্ছি। পদ্মাসেতুর ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে আপনি পিডি’র (প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম) সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

তবে ফোনে পাওয়া যায়নি পদ্মাসেতু প্রকল্পের পিডি শফিকুল ইসলামকে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার পদ্মাসেতু প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে সেতু বিভাগ।

ব্যয় বাড়ানোর কারণ উল্লেখ করে সেতু বিভাগ জানায়, ভৌত নির্মাণ ও পরামর্শক সেবার বিষয়ে ইতোমধ্যে সম্পাদিত চুক্তিমূল্য অনুযায়ী বিভিন্ন প্যাকেজের ব্যয় বাড়ায় মোট প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া প্রকল্পটি সুষ্ঠু ও যথাসময়ে বাস্তবায়নে প্রস্তাব করা হয়েছে অনুমোদিত জনবলের অতিরিক্ত জনবলের জন্য।

অনুমোদিত ডিপিপি বহির্ভূত অতিরিক্ত কাজের প্রয়োজন হলে তা পদ্মাসেতু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যে কারণে আবারও বেড়েছে পদ্মাসেতু প্রকল্পের মোট ব্যয়।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (ভৌত অবকাঠামো বিভাগ) আরাস্তু খান  বলেন, সেতু বিভাগ থেকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের সংশোধনের জন্য ডকুমেন্টারি ‍আমাদের কাছে এসেছে। তা (ডকুমেন্টারি) এখনও খুলে দেখা হয়নি। তবে পরবর্তী সপ্তাহে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় বিস্তারিত দেখা হবে।

সেতু বিভাগ আরও জানায়, মূল সেতুর মবিলাইজেশনের কাজ চলমান। সেতুর টেস্ট পাইল ড্রাইভের কাজও শেষ হয়েছে। সেতুর পাইল নির্মাণের জন্য ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান। চলমান রয়েছে সেতুর কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল সংগ্রহের কাজও।

অপরদিকে ২৪শ টন ওজনের হ্যামার চীন থেকে চলতি বছরের মে মাসে মংলায় এসে পৌঁছাবে। ট্রায়াল পাইলের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে জুন মাসের মধ্যে। আর মূল সেতুর কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে ৫ শতাংশ।

প্রকল্পের নদীশাসনের কাজের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৩ শতাংশ। এ কাজে তিনটি ড্রেজার, একটি মাল্টিপারপাস শিপ, একটি টাগবোট, তিনটি অ্যাংকর বোট, ২৫টি কন্টেইনার ও ৫শ’টি ড্রেজিং পাইপ সাইটে পৌঁছেছে।

এছাড়া অন্য সরঞ্জাম সাইটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে সেতু বিভাগ সূত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *