বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আবারও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এভারকেয়ার হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসনকে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজই সন্ধ্যার দিকে খালেদা জিয়াকে আবার গুলশানের বাসায় নিয়ে আসার কথা রয়েছে। এর আগে বিকেল ৪টায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে জিয়ার গাড়িবহর এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।
এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সরকারি অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, চেয়ারপারসেনের ব্যক্তিগত সরকারি আব্দুস সাত্তার, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মামুন হাসানসহ প্রায় ৩০০ কর্মী-সমর্থক বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনের বাইরে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সর্বশেষ গত ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদপিন্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছিলো।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে। কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবনে ওঠেন। এখনও তিনি সেখানে থাকছেন।
২০২১ সালে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে ছয় দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃদপিন্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকরা।
নানা জটিলতার উন্নত চিকিতসার দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তে বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।