রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলাকালীন ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রীর নিহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ১৫ আগস্টের ওই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না গেজহুবা গ্রুপ করপোরেশন (সিজিজিসি)’ এর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে কোনো আপত্তি থাকবে না বলেও জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।
তিনি জানান, বিআরটি প্রকল্পের সওজ অংশের নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদন্তের জন্য চীন থেকে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। দলের সদস্যরা তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
এদিকে বুধবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ক্রেনচালকসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১ এর সদস্যরা।
এ বিষয়ে র্যাব-১ এর এএসপি ইমরান খান সময় সংবাদকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গার্ডার দুর্ঘটনার ঘাতক ক্রেনচালক, তার সহকারী এবং নিরাপত্তা জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (১৫ আগস্ট) উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড়ে আড়ংয়ের সামনে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে নিহত হন প্রাইভেট কারে থাকা ৫ জন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১৩ আগস্ট) বিয়ে হয় হৃদয় এবং রিয়া মনির। ১৫ আগস্ট বৌভাত শেষে হৃদয়ের বাবা রুবেল মিয়া প্রাইভেটকার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্রাইভেটকারে ছিলেন হৃদয়, রিয়া, রিয়ার মা ফাহিমা (৩৭), তার খালা ঝর্না (২৮) এবং ঝর্নার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। পথে উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড়ে আড়ংয়ের সামনে পৌঁছালে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া ছাড়া সবাই মারা যান। তবে গুরুতর আহত হন নবদম্পতি।
বুধবার বিআরটি প্রকল্পের গার্ডারচাপায় ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। রিটে গত পাঁচ বছরে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিআরটি কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, তার একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।