জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন বড় বিপদে আছে। ইচ্ছে করলেই এই সরকারকে ফালাইয়া দেয়া যাবে। এমন অবস্থায় আছে, এক মুহূর্তেই ফালাইয়া দেয়া যাবে।’
চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন ভয়ে আছে, এই কারণে ভয়ে আছে, আগামীতে যদি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগের খবর আছে।’
শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে জাপা মহাসচিব তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন শেষে বারুক বাজারে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সবকিছুর দাম বাড়ায়া দিছে। বিদ্যুৎ নাই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮ ঘণ্টা, ১২ ঘণ্টাও থাকে না। মানুষ কষ্টে আছে। এ পরিস্থিতিতে তারা হাতে-পায়ে ধরে বলছে, তাদের ছেড়ে চলে না যেতে। এতদিন তাদের সাথে ছিলাম, তাদের ছেড়ে যেন চলে না যাই।’
চুন্নু এ সময় বলেন, ‘বিএনপিও চাইছে আমরা তাদের সাথে যোগ দেই। তারা বলছে, আমরা কি চাই, আমরা তাদের কাছে চাইতে পারি বিরাট কিছু। তবে তারাও ভালো না, বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় ২১ জনকে মেরেছিল তারা।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আগামী এক বছর সংগঠন ঠিক করব, দলটাকে একটু গুছাবো, জোরদার করব, এক বছর পরে সিদ্ধান্ত নেব কার পক্ষে যাব।’
চুন্নু এ সময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল। এ সময় তারা চার খণ্ডে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল। বিএনপির ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় নাই, উপবাস। আওয়ামী লীগ চাইছে বিএনপিকে মুসলিম লীগের অবস্থা করে দিতে। জাতীয় পার্টি ৯০ থেকে ২০২২, এই ৩২ বছর ক্ষমতায় নাই। এই সময়ের মধ্যে এদেশের রাজনৈতিক যে খেলা, এই খেলায়, এ দেশের ক্ষমতায় যাওয়ার খেলায় জাতীয় পার্টি শুধু রেফারির ভূমিকা পালন করে গেছে। আগামীতে রেফারি না ম্যারাডোনার খেলা খেলবে জাতীয় পার্টি।’
তিনি এ সময় বলেন, ‘একটু দোয়া কইরেন, আল্লাহ যদি আমারে বাঁচায় রাখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চেঞ্জ হবে।’
চুন্নু বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান গুণী মানুষ। দেশের জনগণ অসহায় অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছে, তার মতামত অনুযায়ী সামনে আমাদের সিদ্ধান্ত জনগণের পক্ষেই যাবে।’
আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মী বাবারা, প্রশাসন দিয়ে তোমরা বেডাগিরি দেখাও, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে তোমাদের বাড়িঘরে হামলা হবে। উপায় নাই। কুইট্টালবো পিটায়া।’
জয়কা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মো: আবুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডিপ্লোমা কৃষিবিদ এমদাদুল হকের সঞ্চালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য দেন করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন খান দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আসমা আক্তার, নাজমুল সাকির নূরু সিকদার, জয়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন, দেহুন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফ, সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সঞ্জু প্রমুখ।