ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তিনি ভেন্টিলেটর সাপোর্টে (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার প্রক্রিয়া) রয়েছেন, কথা বলতে পারছেন না।
শনিবার (১৩ আগস্ট) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার এজেন্ট আন্দ্রে উইলি জানিয়েছেন, ‘খবর ভালো না।’
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, লেখক একটি চোখ হারাতে পারেন।
এর আগে শুক্রবার (১২ আগস্ট) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে একটি অনুষ্ঠানে সালমান রুশদির ওপর ছুরি হামলা চালায় এক যুবক। এতে আহত হয়েছেন লেখক।
নিউইয়র্কের বাফেলো শহরের কাছেই চৌতাওকুয়া ইনস্টিটিউশনে একটি বক্তৃতা অনুষ্ঠানে যোগ দেন ৭৫ বছর বয়সী লেখক সালমান রুশদি।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসেবে মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তাকে কিল-ঘুষির পাশাপাশি ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে হামলাকারী।
এপির প্রতিবেদন মতে, এ সময় লেখক মেঝেতে পড়ে যান। এরপর সেখান থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া হয়। আর হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ।
সালমান রুশদি নানা কারণে আলোচিত ও সমালোচিত। তার বিরুদ্ধে লেখায় ইসলাম ও মুসলিমদের অমূলক নিন্দা ও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কুৎসা রটনার অভিযোগ রয়েছে। তার লেখা নিয়ে নানা সময়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুসলিম বিশ্ব।
৪০ বছরের লেখক জীবনের শেষ ভাগটি সালমান রুশদি নিরাপত্তার কারণে এক ধরনের আত্মগোপনেই কাটাচ্ছেন। তবে এতে তার লেখালেখি থেমে থাকেনি এবং তিনি পাশ্চাত্যের পৃষ্ঠপোষকতা থেকেও বঞ্চিত হননি। ২০০৭ সালে তিনি ব্রিটিশ সরকারের ‘নাইটহুড’ উপাধিও লাভ করেন।
লেখক হিসেবে সালমান রুশদি প্রথম আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেন ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাসের জন্য। ১৯৮১ সালে তিনি এজন্য ‘ম্যান বুকার পুরস্কার’ লাভ করেন।
কিন্তু ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত পরবর্তী উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তিনি বিশ্ব মুসলিমের প্রতিবাদ ও নিন্দার সম্মুখীন হন।
তারপর থেকে নিরাপত্তার কারণে লোকচক্ষুর আড়ালে ও প্রহরীবেষ্টিত জীবনযাপন করছেন সালমান রুশদি। এ যাবৎ তিনি ১৩টি উপন্যাসসহ অনেক ছোটগল্প ও নন-ফিকশন গ্রন্থ রচনা করেছেন।
এর মধ্যে শিশু-কিশোরদের জন্য ১৯৯০ সালে লেখা ‘হারুন অ্যান্ড দ্য সি অব স্টোরিজ’, ১৯৯৫ সালে রচিত ‘দ্য ম্যুরস লাস্ট সাই’ ও ১৯৯৯ সালে লেখা ‘দ্য গ্রাউন্ড বিনিথ হার ফিট’ উল্লেখযোগ্য।