চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা প্রেমিকা নন। বরং তিনি ঘাতক রেজাউলের স্ত্রী ছিলেন। দুজনের পরিচয় ২০০৯ সালে। সেটি ফেসবুকের মাধ্যমে। পরিচয় থেকে প্রেম। তারপর পরিবারকে না জানিয়ে ২০২০ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু স্বামী রেজাউলের একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকার জেরে মনোমালিন্য ও বাগবিতণ্ডা হয়। ঠিক এ কারণেই স্ত্রীকে পথের কাঁটা ভেবে সরিয়ে দিতে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন রেজাউল।
র্যাব জানিয়েছে, জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে (২৭) হত্যার জন্য কদিন ধরেই ব্যাগে ধারালো অস্ত্র বহন করছিলেন রেজাউল। ১২ আগস্ট ঘটা করে জান্নাতুল নাঈমের জন্মদিন পালনের কথা বলে ১০ আগস্ট তাকে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট নামের একটি আবাসিক হোটেল নিয়ে যান। সেখানে কথা-কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর গোসল করে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চট্টগ্রাম চলে যান রেজাউল।
রাজধানীর পান্থপথে নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধারের পর রেজাউলকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।
এর আগে ওই নারী চিকিৎসককের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত রেজাউল করিম ওরফে রেজাকে চট্টগ্রামের মুরাদপুরের একটি ছাত্রাবাস থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন, ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারের সময় উদ্ধার করা হয় রেজার পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।