সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচেও বড় স্কোর গড়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ৩ শতাধিক রান করেও হেরে যায় বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের আজকের এ ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
ব্যাট হাতে নেমে তামিম ইকবালের হাফ সেঞ্চুরি ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অপরাজিত ৮০ রানের সুবাদে বাংলাদেশ করেছে ২৯০ রান। এ রান এসেছে ৯ উইকেটের বিনিময়ে।
বাংলাদেশের হয়ে এছাড়া বড় সংগ্রহ রয়েছে আফিফ হোসেন (৪১) ও নাজমুল হোসেন শান্তর (৩৮)।
ওয়ানডেতে আজ করা তামিম ইকবালের ৫৫তম অর্ধশতক আসে ৪৩ বলে। যেখানে ১০ চার ও ১ ছয়ে করেন ৪৪ রান। অর্থাৎ ১১ বলেই ৪৪ করেন তিনি। পরে ৫০ রান করে ফেরা তামিম ৪৫ বলের মধ্যে ৩০টি-তে কোনো রানই নেননি।
অধিনায়কের দেখানো পথে ধরে হাঁটতে চেয়েছিলেন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়। কিন্তু তামিম আউট হওয়ার পর দুর্ভাগ্যক্রমে ফিরে যেতে হয় তাকেও। নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তর সোজাসুজি খেলা বল নন স্ট্রাইক প্রান্ত দিয়ে যেতেই সচেতন বোলার চিভাঙ্গা হাত ছুঁয়ে দেন, সরাসরি ভাঙ্গে স্টাম্প। ততক্ষণে নিজের জায়গা থেকে বেরিয়ে গেছেন বিজয়, আউট হন ৩ চারে ২৫ বলে ২০ রান করেন।
তামিম-বিজয় থাকা অবস্থায় তবুও রান উঠছিল স্কোর বোর্ডে। এরপর শান্ত আর মুশফিকুর রহিম সেটাকে টানার চেষ্টা করেন। তাদের তৃতীয় উইকেট জুটি থেকে আসে ৫০ রান। মুশফিক ১ চারে ৩১ বলে ২৫ রানে আউট হলে ভাঙে এই জোট। শুরুর এই তিন ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পর নিজেদের ক্যারিয়ার বাঁচাতেই যেন ব্যস্ত শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে দলের রান রেট কমিয়ে ৫৫ বলে ৩৮ রানে ফেরেন শান্ত।
যেখানে ৬-এর ওপর চড়েছিল রান রেট, সেখানে ৩০ ওভার শেষে ৫ গড়ে ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে সংগ্রহ ১৫১ রান। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ আটকে যান খোলসের মধ্যে, তবে অন্যপ্রান্তে হাত খুলে খেলে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন আফিফ হোসেন। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংই কাল হলো তার। আউট হয়ে ৪১ বলে ৪১ রানের ১০০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজান ৪টি চারের মারে।
ইনিংসের ৪৫ ওভার শেষের পরেও খোলসে আটকা মাহমুদউল্লাহ। তার যাবতীয় ধ্যানজ্ঞান যেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক নিয়ে। সেটি এলো ইনিংসের ৪৭তম ওভারে। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ৬৯ বল খেলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তার আগে আফিফের মতো রান বাড়াতে গিয়ে ১২ বলে ১৫ রান করে আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শেষদিকে ফিফটির কোটা ছোঁয়ার পর কিছুটা দ্রুত রান এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। তার ৮৩ বলে ৮০ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৯০ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ দল।
জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সিকান্দার রাজা। এছাড়া ওয়াসলি মাধেবেরে নিয়েছেন ২টি এবং তানাকা চিভাংগা ও ভিক্টর নিউছি নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে যাওয়া প্রথম ওয়ানডের দল থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ একাদশে এসেছে ৩ পরিবর্তন। সে ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন সফরকারীদের শীর্ষ দুই ব্যাটসম্যান-বোলার লিটন দাস ও মোস্তাফিজুর রহমান। বাধ্য হয়ে হারারেতে রোববার বাংলাদেশ একাদশে আনতে হয় দুটো পরিবর্তন। লিটন দাসের বদলে একাদশে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, আর পেসার মোস্তাফিজের বদলে একাদশে ঢুকেছেন তাইজুল ইসলাম।
প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেটা বাংলাদেশের জন্য হয়ে গেছে বাঁচা-মরার লড়াই। হারলেই জিম্বাবুয়ের কাছে টানা দুই সিরিজ হারের লজ্জায় ডুববে তামিম ইকবালের দল।