‘আজি হতে শতর্বষ পরে কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি কৌতূহল ভরে। আজি হতে শতর্বষ পরে।’ এক শ’ বছরেরও বেশি আগে বাঙালি পাঠকদের প্রতি এই জিজ্ঞাসা ছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।
সেই চিরজাগরুক, বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আজ (২২ শ্রাবণ) ৮১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৩৪৮ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে এবং ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কালজয়ী এ কবি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ নেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোট গল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়।
১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। উইকিপিডিয়া সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত “জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে” ও “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” গান দুটি যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয়, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত ‘শ্রীলঙ্কা মাতা’ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা।
তিনি ১৯১৩ সালে তার গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা, বাণী এই অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যোগায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে শুধু নয়, চিরকালই কবির রচনাসমূহ প্রাণের সঞ্চার করে। আমাদের প্রতিটি সংগ্রামেই শুধু নয়, কবির চিরায়ত রচনাসমগ্র আজীবন স্মরণের শীর্ষতায় আবিষ্ট হয়ে আছে।