ঢাকা: শুক্রবার (৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ক্রীড়া সংগঠক শহীদ শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শহীদ শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের এদিনে তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বহুমাত্রিক ও অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শেখ কামাল ছাত্র জীবন থেকেই ক্রীড়াঙ্গন, শিল্প-সংস্কৃতি, রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। তিনি ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।
শেখ কামালের লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতি, লেখাধুলা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনে বিচরণ করেছেন এবং প্রতিভার ছাপ রেখেছেন। স্বাধীনতার পর খেলাধুলা ও শিল্প-সাহিত্যের প্রসারে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
শেখ কামাল ঢাকার শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এর পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাস করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে যথাযথ ভূমিকা পালন করেন শেখ কামাল।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে তিনি মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল
বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘য়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচুর উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের একজন অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন ছিলেন। শেখ কামাল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ সময় তিনি ছাত্র রাজনীতিতেও সক্রিয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই দেশবরেণ্য অ্যাথলেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাত্রিতে স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির পিতাসহ সপরিবারে মানবতার এই ঘৃণ্য শত্রুদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শেখ কামালও প্রাণ হারান। তিনি এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন।