ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতককে রাজধানীর মিরপুর ছোটমণি নিবাসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেখানে ৫ থেকে ৬ মাস থাকার পর তার দাদা-দাদির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিকেলে সেই নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমি ওনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছি। এ সময় তিনি বলেছেন- শিশুটি প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আগামী ৫ থেকে ৬ মাস ওই শিশু নিবাসে থাকবে। যে কোনো সময় আমি অবিভাবক হিসেবে শিশুকে দেখতে যেতে পারব।
এছাড়াও আমার বাড়ির পরিবেশ ভালো না থাকায় তিনি (ডিসি) বলেছেন আমার বাড়িতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ঘর করে দেবেন। এরপর শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে আসা হবে।
এর আগে শিশুটি কার কাছে, কীভাবে থাকবে এসব বিষয়ে গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) জেলা প্রশাসন, ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন এবং সমাজসেবা বিভাগ একাধিক সভা করে এই সিন্ধান্ত গ্রহণ করে বলেও তিনি জানান।
জানা যায়, গত শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা।
এ সময় মালবাহী ট্রাকের একটি চাকা ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর বুকের ওপর দিয়ে চলে গেলে পেট ফেটে অলৌকিকভাবে জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তান। ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয় দেশজুড়ে।
এরপর এই নবজাতকের পাশে দাঁড়ায় জেলা প্রশাসন ও বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গত ১৮ জুলাই এই শিশুটি জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের পরামর্শে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ২৫ নং শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তাকে চিকিৎসকদের পরামর্শে ফটো থেরাপি দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে শিশু সুস্থ থাকায় হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়ার পর তাকে ছোট্টমণি নিবাসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে জেলা প্রশাসন।