এশিয়ার প্রবৃদ্ধির আভাসে পরিবর্তন এনেছে ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ (এডিবি)। সংস্থাটির মতে, ২০২২ সালে এশিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে বাড়বে জ¦ালানি ও নিত্যপণ্যের দামও। এর আগে গত এপ্রিলে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আভাস দিয়েছিল এডিবি।
কোভিডের আঘাত কাটিয়ে এশিয়ার অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর মধ্যে চীনের লকডাউন এবং পশ্চিমা দেশগুলোয় সুদের হার বাড়ানোয় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এশিয়ার অর্থনীতিতেও। খবর বিবিসি ও এএফপি।
‘জুলাই ২০২২ অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে’ এডিবি বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘœ ঘটায় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ
হতে পারে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাড়ায় ২০২২ সালে এশিয়ার মূল্যস্ফীতি বেড়ে হবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। যেখানে এপ্রিলে দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয় মূল্যস্ফীতি হবে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
সংস্থাটির অনুমান, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাওয়ায় এশিয়ার রপ্তানি, উৎপাদন প্রক্রিয়া ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে। এরই মধ্যে দুই অংকের মূল্যস্ফীতিতে পড়েছে ককেশাস ও মধ্য এশিয়ার বেশির ভাগ দেশ।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার ওপরে ৭ শতাংশ। যদিও এই অঞ্চলের অন্য বড় দেশগুলোর মূল্যস্ফীতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করে দিয়ে বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে, যা উন্নয়নশীল এশিয়ার প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিতে দ্বিতীয় দফা প্রভাব ফেলবে। এরই মধ্যে এই অঞ্চলের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ডলারের উচ্চমূল্য। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় ডলারে বিনিয়োগ বাড়ছে। এতে আঞ্চলিক মুদ্রার দরপতন ঘটছে এবং শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর চীনসহ পূর্ব এশিয়ার প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি কমে হবে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক দেশ শ্রীলংকা এরই মধ্যে দেউলিয়া হয়ে গেছে।
এডিবি বলছে, এই অঞ্চলে মূল্যস্ফীতির চাপ আছে বটে, তবে তা বিশ্বের অন্য যে কোনো অঞ্চলের তুলনায় কম। এই মূল্যায়নটা এশিয়ার জন্য স্বস্তিরই বটে।