শপথ নিলেন শ্রীলঙ্কার নতুন ১৮ মন্ত্রী

Slider সারাবিশ্ব


শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের উপস্থিতিতে শুক্রবার দুপুরের পর শ্রীলঙ্কার নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার চলমান অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ও পর্যটনখাতকে পুনর্গঠিত করতে দায়িত্ব নিল নতুন সরকার। এদিন প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনেসহ ১৭ জন মন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেন।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহে এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিনেশ গুনাবর্ধনে দায়িত্ব গ্রহণের পর মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের উপস্থিতিতে আজ শুক্রবার দুপুরের পর শ্রীলঙ্কার নতুন মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনের হাতে থাকছে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রাদেশিক পরিষদ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আরও ১৭ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। খবর রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডের।
এর আগে গোতাবায়া রাজাপাকসের আমলে আইন ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আলি সাবরি পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী গুনাবর্ধনে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও প্রাদেশিক পরিষদের দায়িত্বে থাকছেন।

১। প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনে: জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও প্রাদেশিক পরিষদ
২। ডগলাস দেবানন্দ: মৎস্য অধিদফতর
৩। শুশীল প্রেমজয়ন্ত: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
৪। বন্দুলা গুনাবর্ধনে: পরিবহন
৫। কেহেলিয়া রাম্বুকওয়েলা: যোগাযোগ ও গণমাধ্যম
৬। মাহিন্দা অমরাবিরা: কৃষি, বন্য প্রাণী ও বন সংরক্ষণ
৭। ড. বিজয়াদাসা রাজাপাকসে: বিচার, কারাগার ও সাংবিধানিক সংস্কার
৮। ড. বিজয়াদাসা রাজাপাকসে: বিচার কারাগার ও সাংবিধানিক সংস্কার
৯। রমেশ পাথিরানা: বৃক্ষরোপণ ও শিল্প
১০। হারিন ফার্নান্দো: পর্যটন ও ভূমি
১১। প্রসন্ন রানাতুঙ্গা: নগর উন্নয়ন ও আবাসন
১২। বিদুর বিক্রমনায়েকে: ধর্ম ও বুদ্ধশাসন
১৩। কাঞ্চনা উইজেসেকেরা: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি
১৪। নাসির আহমেদ: পরিবেশ
১৫। রোশন রণসিংহ: ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
১৬। মনুষা নানায়াক্কারা: শ্রম ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
১৭। তিরান আলেস: জননিরাপত্তা
১৮। নলিন ফার্নান্দো: বাণিজ্য ও খাদ্যনিরাপত্তা মন্ত্রণালয়

এর আগে প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনে সামরিক কর্মকর্তা ও আইনপ্রণেতায় পরিপূর্ণ একটি কক্ষে প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহের উপস্থিতিতে শপথ গ্রহণ করেন। বাকি সদস্যরাও শুক্রবার শপথ গ্রহণ করবেন। ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশের অর্থনৈতিক পতন রুখতে ব্যর্থ হয়ে গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালান।

দিনেশ গোতাবায়া রাজাপাকসের রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি) নেতা। বৃহস্পতিবার বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর পদ খালি হয়। এর পরই রনিল বিক্রমাসিংহের স্কুলজীবনের সহপাঠী দিনেশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন।
১৯৪৯ সালে জন্ম নেয়া দিনেশ গুনাবর্ধনে ট্রটস্কিপন্থি জাতীয়তাবাদী মহাজনা একসঙ্গে পেরামুনার (ক্ষমতাসীন এসএলপিপির অংশ) নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে তার বাবা ফিলিপ গুনাবর্ধনের পর নেদারল্যান্ডস থেকে উচ্চতর পড়াশোনা শেষ করে দলের হাল ধরেন।

এদিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বুধবার (২০ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শুরু হয় শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নতুন নেতা নির্বাচিত করতে একে একে ভোট দেন পার্লামেন্টের ২১৯ আইনপ্রণেতা। অনুপস্থিত ছিলেন দুজন। বাতিল হয় আরও চারটি ভোট।

দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তার পক্ষে ভোট পড়ে ১৩৪টি। অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থী দুলাস আলাহাপেরুমা পান ৮২ ভোট। এ ছাড়াও তৃতীয় প্রার্থী অনুঢ়া দেশনায়েকে পান মাত্র তিন ভোট।

নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন রনিল। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা কঠিন সময় পার করছে। সংকট সমাধানে সরকারের সামনে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন রনিল। এর আগে ছয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *