নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের মধ্যে এবার সাধারণ মানুষের ওপর চাপল ওষুধের বাড়তি দামের বোঝা। বাজারে হঠাৎই চড়া প্যারাসিটামলসহ বহুল ব্যবহৃত ৫৩ ওষুধের দাম। বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতা। এই দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্বর, ঠান্ডার মতো সমস্যা দেখা দিলে সাধারণত প্রাথমিকভাবে পরামর্শ দেয়া হয় প্যারাসিটামল ওষুধের। অথচ হঠাৎই বেড়ে গেল দেশে সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন এ ওষুধের দাম। প্রতি পাতা প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের দাম ৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২ টাকা। আর সিরাপ ১৮ টাকা থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া এমন ৫৩ ধরনের ওষুধের দাম বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
২৪ টাকার এমোক্সিসিলিন ইনজেকশনের দাম বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। ২১ টাকার প্রোমেথাজিন ৩৫ টাকা। এভাবে কোনো কোনো ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কোনোটির দাম বাড়ার হার ১৩২ শতাংশ। ওষুধের বাড়তি দামে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
ক্রেতারা বলছেন, সাধারণ মানুষের জন্য তো এটা একটা বাড়তি বোঝা হয়ে গেল। ওষুধ ছাড়াও সব কিছুর দাম যেভাবে হঠাৎ বেড়ে গেছে, সেই হিসেবে আয় তো বাড়েনি। এটা সবার জন্যই বোঝা হয়ে দাঁড়াল। এর মধ্যে মধ্যবিত্তদের চলতে তো কষ্টটা আরও বেশি হয়ে গেল।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর বলছে, কাঁচামালের দাম বাড়ায় সবকিছু চুলচেরা যাচাই-বাছাই করেই সমন্বয় করা হয়েছে মূল্য।
অধিদফতরের পরিচালক মো. আইয়ূব হোসেন বলেন, প্রধানত আমরা দুটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছি। সেটা হলো কাঁচামালের মূল্য এবং মোড়ক সামগ্রীর মূল্য। যখন কাঁচামাল এবং প্যাকেজিং পণ্যের মূল্য কমে যাবে, তখন ওষুধের দামও কমে যাবে।
যদিও বহুল প্রচলিত ওষুধের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুল রহমান খসরু বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো যে বাংলাদেশের জাতীয় ওষুধ শিল্পকে ১৯৮২ সাল থেকে এই ৪০ বছর যাবত রাষ্ট্র এক ধরণের সুরক্ষা দিয়েছে। আজ এই মহামারিকালে যুদ্ধ চলা অবস্থায় সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এই সময়টায় ছোট ভাড়টা তাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে সাধারণ মানুষের কাঁধে না দিয়ে তারা তাদের চওড়া কাঁধে আরও কিছু দিন বহন করা উচিত ছিল।
সাধারণ মানুষের স্বার্থে ওষুধের বাজারে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।