সরকারি সব দফতরে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস।
বুধবার (২০ জুলাই) সরকারের ব্যয় সাশ্রয় নীতির বিষয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরুপনে সচিবদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অফিস-আদালতে যদি আমরা বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি কমাতে পারি তাহলে আমাদের উৎপাদনের ক্ষেত্রে খুব বেশি ব্যাহত হবে না। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো জাতীয় যে উৎপাদনটা আছে সেটা যেন ব্যাহত না হয়। তো অফিস আদালতে আমরা যখন কাজ করি তখন যদি আমি দুইটা ফ্যানের জায়গায় একটা ফ্যান চালাই তাতেও কিন্তু আমি আমার কাজটা করতে পারব, অসহনীয় পরিবেশ হবে না। সেজন্য আমরা একটা সহনীয় মাত্রা ঠিক করেছি সেটা হলো ২৫ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব বলেন, জ্বালানি খাতে যে বাজেট বরাদ্দ আছে সেটা ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হবে। এর আগে একবার ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। সেটাকে আমরা এখন বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশ করার কথা বলছি। অর্থাৎ যারা যারা জ্বালানি তেল ব্যবহার করবে তাদের বরাদ্দ হবে এখন ২০ শতাংশ কম।
আহমেদ কায়কাউস বলেন, ২০১৩ সালের ১৩ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটা সার্কুলার জারি করা হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছিল এসির তাপমাত্রা ২৪ এ রাখার জন্য। এবারও আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে তাপমাত্রা যেটি আছে সেটি যেন ২৪-২৫ এর নিচে না হয়।
মুখ্যসচিব বলেন, আরও দু-একটি নীতিমালা আমরা করেছি সেটা হলো অনিবার্য যদি না হয় তাহলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করে আমরা যেন এটা অনলাইনে করতে পারি সেটার ব্যবস্থা করা। আর অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করা।
অন্য আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একটি হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখার জন্য বাজার মনিটরিং করা, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করা। যেটা সচিবদেরকে আমরা বলেছি যেন তারা ব্যক্তিগতভাবে এবং তাদের দাফতরিক যেসব কার্যাবলি আছে সেগুলো যেন প্রয়োগ করে এ জায়গায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনা যখনই শুরু হয়েছে তখন থেকেই কিন্তু একটি কথা বলে যাচ্ছিলেন যে বিশ্বের খাদ্য ঘাটতি হতে পারে এবং এখন ইউএন আশঙ্কা করছে যে বিশ্বে একটা খাদ্য ঘটতি হতে পারে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন যে যেখানে পারে সেখানে যেন উৎপাদন করে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সবাই যেন সচেষ্ট থাকে এবং আমাদের যতগুলো পতিত জমি আছে বা বাড়ির আঙিনা সেখানেও যেন গাছ লাগানো হয়। এই বিষয়টাকে আরো জোরদার করার জন্য আমরা সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা আরও জোরদার করব।
সচিব আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য গাড়ি চলাচল হয় এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তেল এবং বিদ্যুৎ দুইটাই ব্যবহার হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত গাড়ি পরিহার করে যদি সেটা অনেকের সঙ্গে বা কোনো বাস মাইক্রোবাস মাধ্যমে যাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা করার জন্য। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা একইভাবে করবে সেক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কিভাবে করা যায় সে কার্যপদ্ধতি তারা বের করবে।
কায়কাউস আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধি সংগ্রহ বৃদ্ধিকল্পে অর্থ বছরের শুরু থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সহায়তা করা।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আরও বলেন, সবশেষ আমরা যে আলোচনা করেছি সেটি হচ্ছে প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পূর্ণ পর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।