বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ও বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জ্বালানি সাশ্রয়ে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে অফিসের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা, ভার্চুয়ালি অফিস করা, মসজিদে আপাতত এসি বন্ধ রাখার মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সঙ্কট চলার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘ধৈর্য্য ধরে যদি আমরা এটাকে সহ্য করে সবাই মিলে অতিক্রম করি, তাহলে ইনশাল্লাহ, ভবিষ্যতে আবার সুদিন আসবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সংকট ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করে তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, ধৈর্য্য সহকারে এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে। সবাইকে নিজ উদ্যোগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক উন্নত রাষ্ট্র, যাদের অনেক টাকা পয়সা আছে, তারাও লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় হচ্ছে, জাপানে হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে বরাদ্দ থাকা সত্বেও, ব্যাংকে অর্থ থাকা সত্বেও সংবরণ করছে। আজকের আলোচনার একটা মুখ্য বিষয় হচ্ছে যে আমরা আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনকে কমিয়ে আনব, যাতে আমাদের খরচ কম হয়’
এর অংশ হিসেবে ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করার পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও বিদ্যুতের ব্যয় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
সারাদেশে এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই ঘাটতি অঞ্চলভিত্তিক ভাগ করে নিতে হবে। তাতে দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কোনো কোনো জায়গায় দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং হতে পারে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং পৃথিবীর এই দুর্যোগপূর্ণ সময় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি জানান, কীভাবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো যায় বৈঠকে তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করা, অফিসে কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা, প্রয়োজনে বাসা থেকে ভার্চুয়ালি অফিস করা, সরকারি গাড়িতে বেশি লোক পরিবহন করাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জ্বালানী উপদেষ্টা বলেন, ‘দোকানপাট শপিংমল বন্ধ থাকবে, এসিগুলো যেগুলো চলে, সেটা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে হবে, মসজিদের এসি আপাতত বন্ধ থাকবে, কেউ যদি এসব আদেশ অমান্য করে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হব।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হয়তো কারপুলিং শুরু করব যাতে দুই-তিনজন মিলে এক গাড়িতে আসতে পারি অফিসে। সরকারি সভাগুলো কমিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করব, সভাগুলো অনলাইনে করার চেষ্টা করব।’