জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) তার নিজ বাসভবনে। এর আগে তার মরদেহ নেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও সংসদ ভবনে। খবর সিএনএন।
শুক্রবার (৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে শহর নারায় নির্বাচনী প্রচারণার অনুষ্ঠানে এক ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ বছর বয়সী শিনজো আবে। তিনি বন্দুক হামলার শিকার হন। এনএইচকে ব্রডকাস্টারের এক প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে গুলির শব্দ শুনেছেন এবং আবেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছেন।
আবেকে গুলি করে আহত করার অভিযোগে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এনএইচকের একটি ভিডিওতে তার রক্ষীদের একজনকে আটক করতে দেখা যায়।
শনিবার (০৯ জুলাই) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ নিয়ে আসা হয় টোকিওতে তার বাড়িতে। সোমবার (১১ জুলাই) প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে তার বাড়িতে জড়ো হন সর্বস্তরের মানুষ।
সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, খুব ছোট পরিসরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। টোকিওতে তার পরিবার ও আবের সহযোগীরা তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করবেন।
সংবাদমাধ্যমের খবরে আরও জানানো হয়, আবের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি শেষবারের মতো বিদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও সংসদ ভবনের পাশ দিয়ে নেওয়া হবে।
সোমবার (১১ জুলাই) রাতে রাজধানীর একটি বৌদ্ধ মন্দিরে আবের জন্য রাত জাগেন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ। টোকিওতে তার ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদর দফতর এবং যেখানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল সেই স্থান ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবে যে বিষয়গুলো নিয়ে আবেগপ্রবণ ছিলেন, সেগুলো আমি তুলে ধরবো।’ এর মধ্যে রয়েছে জাপানের শান্তিবাদী সংবিধান পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যাতে তার সামরিক বাহিনীর বৈধতা স্পষ্ট হয়।
জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আবে। ২০০৬ থেকে ২০০৭ এবং ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দুদফায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে টোকিওর সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এই রাজনীতিক ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করার পাশাপাশি জাপানকে আবারও বিশ্ব শক্তিতে পরিণত করার পথে অনেকটা অগ্রসর হয়েছিলেন। স্বাস্থ্যগত কারণে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
২০২০ সালে ৬৭ বছর বয়সী আবে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি নিজে প্রার্থী না হলেও তার দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্য সদস্যদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছিলেন তিনি।