ঢাকা: দুঃসহ যানজট আর রাজধানী ঢাকা যেন সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। তবে ঢাকাবাসীর বড় একটা অংশ প্রতি ঈদে গ্রামের বাড়ি গেলে দৃশ্যপট বদলে যায়।
তখন ঢাকা ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তায় বের হলে মনেই হয় না জ্যামের শহর এটা। এবার ঈদুল আযহার ছুটিতেও রাজধানী প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে।
শনিবার (০৯ জুলাই) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরা থেকে শাহবাগ আসতে যেখানে সময় লাগতো আড়াই ঘণ্টা, সে রাস্তায় গণপরিবহনে যেতে সময় লাগছে ৩০ মিনিট। ব্যক্তিগত গাড়ি হলে সময় আরও কম লাগছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ছেড়ে গেছে অর্ধেকের বেশি মানুষ। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে গত বুধবার থেকেই মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। ৮০ লাখের বেশি মানুষ রাজধানী ছেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে এখন আর ব্যস্ততা নেই। শাহবাগ, পল্টন, সচিবালয়, কাকরাইল, মৎস্যভবন ও হাইকোর্ট এলাকার রাস্তাগুলো এখন ফাঁকা। মাঝে মধ্যে কয়েকটি ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন দেখা গেলেও যানজটের কোনো চিহ্ন নেই।
তবে যানযট না থাকলেও গণ-পরিবহনের সংখ্যা কমে গেছে। সিএনজি ও রিকশা চালকেরা স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ দাম চাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে যারা বাড়ি যাচ্ছেন, তারা এসব যানবাহনে করে লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে এবং রেলওয়ে স্টেশনে যাচ্ছেন।
সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ‘বিকাশ পরিবহনের’ একটি বাসের হেলপার শফিক বলেন, যাত্রী নেই তাই রাস্তা-ঘাট সব ফাঁকা। আব্দুল্লাহপুর থেকে মাত্র ৩০ মিনিটে নিউমার্কেটে এসেছি। অন্য সময়ে ২-৩ ঘণ্টা লেগে যেতো।
রাজধানীর মিরপুর থেকে ৩০ মিনিটে পল্টনে আসা যাত্রী হামিদুর রহমান বলেন, ছুটি দেরিতে পাওয়ায় এখন বাড়ি যাচ্ছি। পল্টন থেকে বাসে উঠব। মাত্র ২৫ মিনিটে বাস পল্টন এসেছি। ঈদ ছাড়া ফাঁকা রাস্তা দেখা যায় না।
সিএনজিচালক শাহীনুর রহমান বলেন, সকাল থেকে তিনটি বড় ট্রিপ পেয়েছি। রাস্তাঘাটে গণপরিবহন কম থাকায় বেশি ভাড়া পাওয়া যায়। রাস্তা ফাঁকা থাকায় খুব সহজেই যাওয়া যায়।
রাস্তা ফাঁকা ও গণপরিবহন কম থাকার পাশাপাশি যানজট না থাকায় রিকশা ও সিএনজিচালকদের আয় ভালো হচ্ছে। কিন্তু রিকশা ও সিএনজি চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কিছু যাত্রী।
রাজধানীর শ্যামলী থেকে নিউমার্কেটে সিএনজি করে এসেছেন রুবিনা আক্তার। তিনি বলেন, স্বাভাবিক ভাড়া থেকে সিএনজি চালকরা ঈদ বোনাসের নামে একশ থেকে দেড়শ টাকা বেশি চাচ্ছেন। রাস্তায় বাস নেই, বাধ্য হয়ে টাকা বেশি নিলেও দিতে হচ্ছে।