গাজীপুরে অর্ধশত কোটি টাকার সরকারী জমি বেহাত হওয়ার আশংকা!

Slider টপ নিউজ


গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর এলাকায় ২৭ বিঘা সরকারী জমি বেহাত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। সরকারী খাস জমি বিআরএস রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানায় চলে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। জমি গুলো উদ্ধারে জেলা প্রশাসন শত শত আপলি মামলা করেছে যা চলমান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালে গাজীপুর সিটিকর্পোরেশনের ৬৮ নং বারেন্ডা মৌজার এস এ ১৩১, ১৩২ দাগে খাসখতিয়ানভূক্ত ৭.৮৬ ও ১.১৫ সহ মোট ৯.০১ একর ভুমি বিআরএস রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে। এই ভুমি রেকর্ড সংশোধনের জন্য জেলা প্রশাসক গাজীপুর আপিল করেন। আপিল কেসের পরিমান কয়েকশত। বেহাত হতে যাওয়া জমির মূল্য অর্ধশত কোটি টাকার উপরে। ২০১৯ সালে এই লুটপাট হয়।

অনুসন্ধানে বিআরএস রেকর্ডের দায়িত্বে থাকা গাজীপুর সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে চারজন মৌসুমী ষ্টাফ পাওয়া গেছে। তারা একটি করে অফিস কক্ষ ব্যবহার করে সরকারী চেয়ার-টেবিলে বসে অফিসারের মত কাজকর্ম করছেন। গাজীপুর শহরে বরুদা এলাকায় অবস্থিত এই ভূমি রেকর্ড জরিপ অফিসে এ ধরণের স্টাফ নিয়ে সাধারণ মানুষ নানা ধরণের বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, দোতলা বাড়ির পুরোটিই এই সরকারী অফিস। অফিসের নীচতলায় প্রবেশ করতেই দেখা যায় ডান দিকে একটি রুমে সরকারী কর্মকর্তার আদলে চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে আছেন নুরুন্নবী সুমন। তার নিজের পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে আমতা আমতা শুরু করেন। বার বার তিনি আক্কাছ আলী স্যারের নাম বলছেন। খোজ নিয়ে জানা যায়, সুমন এই অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মোঃ আক্কাছ আলীর নিকটাত্মীয়। জমির মালিক কোন ভূক্তভোগীকে সুমনের সাথে কথা বলতে হয়। আক্কাছ আলী সাহেব সরাসরি কোন ভূক্তভোগীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন না।

এই অফিসের দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, একই সিটিং-এ চেয়ার টেবিলে বসে সরকারী কাজ করছেন মোঃ রুবেল মিয়া, মাইনুল ইসলাম ও রুদ্র। তারা তিনজনই সরকারী লোক বলে ভূক্তভোগীরা জানেন।

একটি সরকারী অফিসে চার জন অস্পষ্ট স্টাফ সম্পর্কে জানতে গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মোঃ আক্কাছ আলী, ও একই পদের অফিসার মোঃ মজিবুর রহামানকে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মোঃ আক্কাছ আলীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য ভূক্তভোগীরা যে নম্বর জানেন, সেই নম্বরে ফোন করলে নুরুন্নবী সুমন ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর আক্কাছ আলী সাহেবের সাথে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেন।

এই বিষয়ে কারো বক্তব্য না পাওয়া গেলেও গাজীপুর সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের খারিজ সহকারী তাজুল ইসলাম বলেন, সুমন, রুবেল ও মাইনুল মৌসুমী স্টাফ কিন্তু রুদ্র কে তিনি চিনেন না। সম্প্রতি মাইনুলকে নৈশপ্রহরী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মৌসুমী স্টফের কলংক মুচনের চেষ্টা শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত: গোপন সুত্রের খবরে জানা যায, বেশ কিছু সরকারী জায়গা জমি ও বিচারাধীন মামলার নালিশি সম্পত্তি এলোমেলোভাবে রেকর্ডভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। সেই সকল তথ্যের সততা যাচাইয়ের জন্য সরেজমিন গিয়ে এই মৌসুমী স্টাফদের অস্তিত্ব পাওয়া গেলো। একই সাথে রেকর্ড করতে আসা সাধারণ ভূক্তভোগীদের ভোগন্তীরও যেন কোন সীমা নেই। তিন জন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জমির মূল্য হিসেবে করে রেকর্ড করার প্রক্রিয়া এই অফিসে চিরায়ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *