ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য (মেম্বার) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলা থেকে পাত্রী দেখে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হন।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার দিনগত রাতে বোয়ালমারী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, ওই উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের ফলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় মহিলা সদস্য (৩৫) গত শনিবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী বােয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের অমৃতনগর গ্রামে পাত্রী দেখতে আসেন। পাত্রী দেখা শেষে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে অমৃতনগর বটতলা এলাকায় এলে তিনি দিক হারিয়ে ফেলেন। তখন ওই জায়গায় বসে থাকা কয়েকজন যুবককে মহিলা মেম্বার বলেন, ‘আমি আলফাডাঙ্গার বুড়াইচ যাবাে, আমাকে একটু পথ দেখিয়ে দেন। ’
পথ দেখানাের সুযােগে তারা ওই মহিলা মেম্বারকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। পরে অসুস্থ অবস্থায় ওই মহিলা মেম্বার কােনো রকমে ওই স্থান থেকে রাস্তায় এলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।
পরবর্তী সময়ে রোববার সকালে ওই মহিলা মেম্বার থানায় গিয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর দুপুরে প্রধান অভিযুক্ত মাহাবুব আলমকে (৩০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মাহাবুব বােয়ালমারী পৌরসভার দক্ষিণ কামার গ্রাম-রায়পুর এলাকার আব্দুল হকের ছেলে। পেশায় মাইক্রোবাসের ড্রাইভার।
এদিকে, এ ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠে পড়ে লাগে। যে কারণে ঘটনাটি দেরিতে প্রকাশ পায়। এক পর্যায়ে রোববার রাতে বিষয়টি সামাজিক যােগাযােগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রভাবশালী মহল ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়।
বােয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ওই মহিলা মেম্বার বিষয়টি জানানাের সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূলহােতা মাহাবুব আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চালানাে হচ্ছে।
দুপুরে ওই মহিলা মেম্বারকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানাে হয়। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা সঠিক নয় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা সার্কেল) সুমন কর বলেন, ‘এ সংক্রান্তে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা রজু হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা সকল আসামিদের আইনের আওতায় আনতে সমর্থ হবো।’