ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। যেহেতু কোরবানির ঈদ তাই আপনার রান্নাঘরের ব্যবহার বলে শেষ করা যাবে না। দেখা যাবে আপনার সারাটা দিন রান্নাঘরকে ঘিরেই কেটে যাবে। রান্নাঘরটি গুছিয়ে রাখা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তোলা ও কোরবানির মাংসের সঠিক ব্যবহার ও বণ্টন ইত্যাদি কাজগুলো সম্পন্ন হবে রান্নাঘরে। তাই ঈদের আগেই রান্নাঘরটা একটু গুছিয়ে রাখা প্রয়োজন। জেনে নিন ঈদের আগে রান্নাঘরের প্রস্তুতি ও গুছিয়ে নেওয়ার কিছু কৌশল।
১) কোরবানির ঈদে আপনার রান্নাঘরের সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজনে পড়বে সেটা হলো ফ্রিজ। আর তাই আগেভাগে ফ্রিজটি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে রাখুন, সঙ্গে মাংসগুলো যাতে স্বাচ্ছন্দে রাখতে পারেন তার জন্য ফ্রিজের মধ্যে জায়গা রেডি করুন।
২) ঈদে প্রয়োজনীয় জিনিসত্র যেমন, ছুরি, বটি, দা, কাঁচি, চপার বোর্ড, হাড়ি পাতিল সবগুলো গুছিয়ে রাখুন। তা ছাড়া যেসব জিনিসগুলোতে শাণ দেওয়া প্রয়োজন সেগুলো আগে থেকেই শাণ দিয়ে রাখুন।
৩) ঈদে রান্নাঘরে যেহেতু মাংস চর্বির ছড়াছড়ি থাকবে তাই আগেভাগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন হন। আগে থেকে একটি ঢাকনাওয়ালা ডাস্টবিন এর ব্যবস্থা করে ফেলুন।
৪) ঈদের দিন আপনার রান্নার কাজে প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন ওভেন, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার ও ফুড প্রসেসর এসবগুলো পরিষ্কার করে পরিপাটি করে রাখুন। রান্নাঘরে স্বভাবতই পিঁপড়ার উৎপাত বাড়তে পারে আর তাই পিঁপড়া দূর করার প্রস্তুতিও আগে থেকে নিয়ে রাখুন।
৫) রান্নাঘরটি স্বাভাবিকভাবেই রক্ত আর মাংসের গন্ধ ও দাগে ভরে যাবে। তাই যাতে তাড়াতাড়ি এসব নোংরা ময়লা পরিষ্কার করে ফেলা যায় তার সব রকম আয়োজন করে রাখুন। ভিনেগার, ক্লিনার, ডেটল, স্যাভলন অথবা ব্লিচিং পাউডার হাতের কাছে রাখুন।
৬) ঈদের আগেই মাংসের জন্য আদা, রসুন, পেঁয়াজ, হলুদ, মরিচ, তেজপাতা, গরম মশলা, গোলমরিচ, জায়ফল, শাহি জিরা, জয়ত্রী, পোস্তদানা, সয়া সস, তেল, টক দই এবং প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রাখুন। গুঁড়া মশলাগুলো আলাদা আলাদা কৌটায় নাম লিখে গুছিয়ে রাখুন। আদা, রসুন, পেঁয়াজ বেটে রাখুন। তাহলে প্রয়োজনের সময় সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। গরম মসলা আর জিরা বেশি আলোতে না রাখা ভালো। এতে গন্ধ বা নষ্ট হয়ে যায়।
৭) ঈদের আগে পাড়া মহল্লায় দা-বটি ধার করানোর অনেক লোক পাওয়া যায়। এ সময়টায় যেহেতু দা, বটি ও ছুরি দিয়ে মাংস ও শক্ত হাড় কাটতে হয় তাই এগুলো আগে থেকেই ধার করিয়ে নেয়া উচিত। তা না হলে মাংস কাটা ঝামেলা হয়ে যাবে। এক ছুরি দিয়ে সবকিছু কাটতে ব্যবহার করুন এক টুকরা লেবু। কাটা হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ছুড়ির দু’পাশে ঘষে নিন লেবু।
৮) কোরবানির ঈদ মানেই তো এই বাড়ি ওই বাড়িতে মাংস বিলাতে যাওয়া। আর এই জন্য প্রয়োজন প্রচুর পলি ব্যাগের। তাই আগে থেকেই এই ব্যাগ জোগাড় করে না রাখলে ঈদের দিন বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তা ছাড়া নিজের বাসাতেও ডিপ ফ্রিজের ভেতরে মাংস, কলিজা, মগজ ইত্যাদি আলাদা আলাদাভাবে রাখার জন্যও প্রয়োজন উপযুক্ত পলি ব্যাগ।
৯) কোরবানির সময় মাংস রাঁধার জন্য প্রয়োজন হয় বড় পাতিলের। বড় পাতিলগুলো পুরো বছর আর তেমন প্রয়োজন পড়ে না বলে ময়লা হয়ে থাকতে পারে। তাই এগুলো ঈদের আগেই পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখুন। এতে ঈদের দিনের কাজ কমে যাবে আপনার।