ইসলাম ধর্মের নবী মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে সাবেক বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা উত্তেজনা উসকে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সেজন্য তার ‘পুরো দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া’ উচিত বলেও মন্তব্য আদালতের।
নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব এফআইআর দিল্লিতে স্থানান্তরের একটি আবেদনের প্রতিক্রিয়া জানাতে সুপ্রিম কোর্ট এসব মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
দেশটির রাজস্থানের উদয়পুরে এক হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে হত্যাসহ ভারতে এখন যা হচ্ছে তার জন্য নূপুর শর্মাকে এককভাবে দায়ী করেন আদালত।
মহানবীকে মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির জেরে উদয়পুরে এক হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে দুই মুসলিম ব্যক্তি হত্যা করলে পুরো রাজ্যে ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খুনিরা এ হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও অনলাইনে আপলোড করে। এরপর আরেকটি ভিডিওতে তারা এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গর্ব প্রকাশ করে এবং ভারী ছুরি প্রদর্শন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হুমকি দেয়। অবশ্য পরে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সূর্য কান্ত বলেন, কীভাবে বিতর্ক উসকে দেওয়া হয়েছে তা আমরা দেখেছি। কিন্তু সে (নূপুর শর্মা) যা বলেছে, এমনকি একজন আইনজীবী হিসেবেও তা খুবই বেমানান। পুরো দেশের কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।
সূর্য কান্ত আরও বলেন, সে (নূপুর) হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে নাকি সে নিজেই নিরাপত্তা সংকট তৈরি করেছে? যেভাবে সে পুরো দেশের আবেগকে আলোড়িত করেছে। দেশে যা হচ্ছে তার জন্য সে একা দায়ী।
এদিকে নূপুর শর্মা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন জানিয়ে তার আইনিজীবী বলেন, একটি টেলিভিশন বিতর্কে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাব দিতেই শর্মা এমন কথা বলেছিলেন। এ সময় আদালত ওই উপস্থাপকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন।
নূপুর শর্মার আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের কথা বলার অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। তখন বিচারক কৌতুকের সুরে বলেন, গণতন্ত্রে প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার আছে। ঘাস জন্মানোর অধিকার আছে এবং গাধার খাওয়ার অধিকার আছে। তাকে সাংবাদিকের পদে বসানো যাবে না। তিনি টিভি বিতর্কে গিয়ে কটূক্তি করেন এবং সমাজ কাঠামোতে এর প্রভাব এবং পরিণতির কথা চিন্তা না করে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেন।