সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকা, টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামার প্রস্তুতি। তবে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সেই প্রস্তুতি যেভাবে হলো, তাতে ভালো কোনো বার্তা দিল না বাংলাদেশ দলের। ভয়ঙ্কর ফেরি জার্নিতে রীতিমত বিধ্বস্ত জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটারসহ বেশ কয়েকজন সদস্য। ডোমিনিকায় যাত্রা পথে সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ আর ‘মোশন সিকনেসে’ নুইয়ে পড়েছেন শরিফুল ইসলাম, নুরুল হাসানরা।
ডোমিনিকায় তখন স্থানীয় সময় রাত ১০টা। অথচ গোটা দলের সদস্যরা ক্লান্তি ঘোচাতে আগেভাগে ঘুমিয়ে গেছেন। তবুও বাংলাদেশ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ঢাকা পোস্টের ফোন পেয়ে দলের এক সদস্য শোনালেন ভয়ঙ্কর যাত্রার গল্প। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে সমুদ্রযাত্রা কতটা বীভৎস হতে পারে সে অভিজ্ঞতা শোনালেন অল্প কথায়। যা শুনলে শিউরে উঠতে বাধ্য যে কেউই।
সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনেক হয়ে ডোমিনিকা। সব মিলিয়ে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার জার্নি। সমুদ্রে ফেরিতে এর আগে এতো সময় কখনোই যাত্রার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশ দলের কোনো সদস্যের। যাত্রার আগে দল ছিল দ্বিধাবিভক্ত, অনেকেই এই যাত্রার পক্ষে ছিলেন না। তবে উপায় ছিল না হাতে। বিমান যাত্রার খরচ আর ঝক্কি ছিল তুলনামূলক ঢের বেশি। ফেরি যাত্রা যেমন বাড়তি সময় বাঁচায়, তেমন খরচও।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধে দুই দিন আগের সাইক্লোনে। যার কারণে সমুদ্রে ঢেউয়ের তোড়ও বেশি ছিল। এই ঢেউয়ের মধ্যে জার্নি আর ‘মোশন সিকনেসে’, সব মিলিয়ে বিভীষিকাময় এক অভিজ্ঞতাই হয়েছে ক্রিকেটারদের।
দলের সেই সদস্যের মতে ফেরি সাইজ খুব বড় নয়। এর সঙ্গে ৭-১০ ফুট উচ্চতার ঢেউ মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ঢেউয়ের ধাক্কায় ফেরি যেভাবে দুলছিল, তাতে দলের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাঁহাতি পেসার শরিফুল, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ম্যানেজার নাফিস ইকবাল এবং সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য ‘মোশন সিকনেসে’ আক্রান্ত হন। তাদের কয়েকজন বমিও করেন এসময়।
তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে এই বীভৎস যাত্রা শেষে সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় পৌঁছেছে দল। সেখান থেকে ম্যানেজার নাফিস ইকবাল ঢাকা পোস্টকে জানালেন, তারা এখন বিশ্রামে আছেন। এখন সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক। সবাই সুস্থ আছেন। পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
ডোমিনিকায় ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রথমটি ২ ও দ্বিতীয়টি ৩ জুলাই। এই ভয়ঙ্কর যাত্রার মাত্র একদিনের পরেই মাঠের লড়াই, টেস্ট সিরিজ হারের পর সে লড়াইয়ে কেমন করে সফরকারীরা, এখন সেটিই সেখার অপেক্ষা।