২৫ বছর আগে দুর্ঘটনায় দুই হাত হারান মতিয়ার রহমান মন্টু। এর পর ভোলপাল্টে ফেলেন তিনি। ইসলামি বেশভূষা আর দুই হাতের পঙ্গুত্বকে পুঁজি করে ভিক্ষায় নামেন মন্টু। হাত কাটা থাকায় আয়-উপার্জনও ভালো হয়। এর পর হজ ভিসায় সৌদি আরব গিয়ে ভিক্ষা করতে থাকেন তিনি। অবশেষে ভিক্ষা করার সময় সৌদি আরবের মদিনায় পুলিশের হাতে আটক হন মন্টু।
মন্টু মিয়ার বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের সিন্দুরকৌটা গ্রামে, হারু মিয়ার ছেলে। ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে ২২ জুন মদিনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাংলাদেশ হজ মিশনের কর্মীরা থানায় মুচলেকা দিয়ে মন্টুকে ছাড়িয়ে আনেন।
গাংনী উপজেলার সিন্দুরকোটা গ্রামের লোকজন জানান, দুহাত হারানোর পর মন্টু তেমন কিছু করতেন না। পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ সংসার চালাতেন। ৫৮ বছর বয়সী মন্টু একাধিকবার সৌদি আরব গেছেন। মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে ভাটাপাড়ায় মন্টুর সংসার। তার স্ত্রী মমতাজ পারভীন জানিয়েছেন, তার স্বামী একাধিকবার সৌদি আরবে গেছেন। তবে সৌদি আরব গিয়ে তার স্বামী কী করতেন, তা বলতে পারেননি তিনি।
মতিয়ার সৌদি আরবে যান ধানসিঁড়ি ট্র্যাভেল এয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। গত ২৫ জুন ওই এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়েরর উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন বলেন, এরই মধ্যে এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দেশে ফিরলেই তাকে যেন গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে যে এজেন্সি পাঠিয়েছে, তাদের নিবন্ধনও বাতিল করা হবে।
মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ বলেন, ‘ইউএনওর মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে পুরো বিষয়টি আমি জানতে পারি। হজের নামে মদিনা শরিফে গিয়ে ভিক্ষার ঘটনা দেশের জন্য এবং আমাদের জন্য খুবই লজ্জার। স্থানীয়রা জানান, গত ২০১২ সালে প্রথমবার হজ করতে যান তিনি। কয়েকবার ভারত ভ্রমণও করেছেন।
মতিয়ারের ভাই আতিয়ার রহমান বলেন, ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করে মতিয়ারসহ তার স্ত্রী-সন্তান। তার যদি এত জমি কিংবা অঢেল সম্পত্তি থাকত, তা হলে ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করত না। তার ভাই সৌদিতে ভিক্ষা করেছে কিনা, তা তারা জানেন না।
গাংনী থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, এর আগে তার নামে দুটি মামলা হয়। সেগুলোতে তিনি খালাস পেয়েছেন।