পদ্মা সেতুর নাট খোলা বায়েজিদের যে সাজা হতে পারে

Slider বাংলার আদালত


পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরের দিন রোববার (২৬ জুন) সকালে অবসান ঘটে দীর্ঘ প্রতীক্ষার। শুরু হয় যান চলাচল। সেদিন সেতু পার হতে মানুষের মধ্যে দেখা গেছে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।

পদ্মা সেতুতে দাঁড়ানো বা ছবি তোলা নিষেধ হলেও প্রথমদিনে সেতুর দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা কিছুটা নমনীয় ছিলেন। আর এ সুযোগে সেতুতে ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ করেছেন টিকটক ভিডিও। এরই মধ্যে বায়েজিদ তালহা নামে এক যুবক ঘটিয়ে ফেলেন এক অপ্রীতিকর ঘটনা। খুলে নেন পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট। মামুন নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে সেই ভিডিওটি আপলোড করা হয়। পরে সেদিন বিকেলেই রাজধানীর শান্তিনগর থেকে বায়েজিদকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় বায়েজিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় পদ্মা সেতুর দক্ষিণ থানায় করা হয় মামলা। আইনটির যে ধারায় তার নামে মামলা হয়েছে, সে ধারায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় ‘অন্তর্ঘাতমূলক’ (স্যাবোটাজ) কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা ও শাস্তির উল্লেখ রয়েছে।

এই আইনের ১৫ (খ) ধারায় বলা হয়, কোনো রেলপথ, রোপওয়ে, রাস্তা, খাল, সেতু, কালভার্ট, বন্দর, ডকইয়ার্ড, লাইটহাউস, বিমানবন্দর, টেলিগ্রাফ বা টেলিফোনের লাইন অথবা টেলিভিশন বা বেতার স্থাপনার দক্ষতা বিনষ্ট বা ক্ষতিসাধনের মতো কাজ করা যাবে না। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এছাড়া যাবজ্জীবন বা ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে। সেই সঙ্গে তাকে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা যাবে।

এ বিষয়ে সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশনের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ সোমবার (২৭ জুন) বলেন, ‘সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে ভিডিও করে এবং সেটাকে পুঁজি করে, যেভাবে মানুষের ইমোশনকে আঘাত দেয়া হয়েছে, আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা অনেক বড় অপরাধ। আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে এটা একটা ‘অন্তর্ঘাতমূলক’ (স্যাবোটাজ) কাজ। সে জন্যই তার নামে মামলার অভিযোগ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামিকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছি।’

সিআইডির ধারণা, এটা পরিকল্পিত। এ বিষয়ে রেজাউল মাসুদ বলেন, আমাদের অনেক জায়গা থেকে তথ্য আছে এবং তার আগের অ্যাক্টিভিটিস দেখছি। সোশ্যাল মিডিয়া তার যে ইনভলবমেন্ট এবং তার এলাকার যে আগের অ্যাক্টিভিটিস, তার যে মোটিভ এগুলোর ভেতরে আমরা এখন প্রবেশ করব। তবে কারও প্ররোচনায় এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা তদন্তের স্বার্থে সে বিষয়ে কিছুই জানায়নি সিআইডি। নাট খুলতে অন্য যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলেও তাদের প্রাথমিক ধারণা।

তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, টুল বক্সের যন্ত্রপাতি দিয়ে রেলিংয়ের নাটবল্টু খুলে গ্রেফতার হওয়া মো. বায়েজিদের সঙ্গে বিএনপি রাজনীতির সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকায় বায়েজিদ ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। পটুয়াখালীতে থাকাকালে ছাত্রদলের রাজনীতিতে তাকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *