ঢাকা: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে জীবন চৌধুরী (১৯) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রাফি আহমেদ (১৮) ও মো. বিজয় (১৭) দুই তরুণ আহত হয়েছে।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জীবন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরে সাংবাদিক গলি কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় রাতে তিনজনকে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়।
নিহত জীবন কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার পশ্চিমঘর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। তিনি কামরাঙ্গীরচরে কলেজ রোডের নুরু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
বাবা আব্দুল হাকিম বলেন, জীবন দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। একটি কার্টুন কারাখানায় কাজ করতো। রাতে কলেজ রোডে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে কী নিয়ে মারামারি হয়েছে তা জানতে পারিনি। তিন ভাই ১ বোনের মধ্যে জীবন ছিল সবার বড়।
নিহতের বন্ধু মো. নিরব বলেন, তারা বেশ কয়েকজন মিলে লাইট জ্বালিয়ে কলেজ রোডে ক্রিকেট খেলার পর বিজয়সহ ৮ বন্ধু কলেজের ১নম্বর গেটে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় অন্য এলাকার কয়েকজন সেখানে জড়ো হয়। সেখানে মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে নাজমুল, হৃদয়, বাবুসহ কয়েকজন বিজয়, রাফি ও জীবনকে ছুরিকাঘাত করে।
নিরব দাবি করেন, এর আগে তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। দুই গ্রুপের মারামারি থামাতে গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। পরে আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জীবনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এর মধ্যে জীবন নামে এক যুবক মারা গেছে। তার পেটে, পাজরে ও পিঠে ছুরিকাঘাত ছিল। আহত রাফির বাম পাজরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। আর বিজয়ের হাতে আঘাত ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, একটি মোবাইল হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারি ঘটনায় ছুরিকাঘাতে তৃতীয় পক্ষের একজন মারা যায়। এই ঘটনায় আরও দুই জন আহত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নোমান নামের একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। এই বিষয়ে তার রুমমেট শামীমকে সে সন্দেহ করে। এটাকে কেন্দ্র করে শামীম-নোমানের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নোমান তার বন্ধু হৃদয় ও বাবুসহ কয়েক জন মিলে শুক্রবার রাতে কলেজ রোডের সাংবাদিক গলিতে শামীমের ওপর হামলা করে। ঘটনার সময় সেখানে অবস্থান করা এলাকার কয়েকজন ছেলে তাদের মারামারিতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে হৃদয়, বাবু ও নোমান মিলে জীবনসহ তিন জনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জীবন মারা যায়।
এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নোমান ও শামীমসহ আরও বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলে জানান ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।