বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আওয়ামী লীগের এত বাহবা পাওয়ার কিছু নেই। যমুনা সেতু উদ্বোধনের দিন পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তাই পদ্মা সেতু নিয়ে এতো কিছু করার দরকার নেই।
শুক্রবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় সিলেটের একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় কেন্দ্রীয় যুবদলের ত্রাণ বিতরণ শেষে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিনা ভোটে যারা ক্ষমতায় আসে তারাই একমাত্র দেশের ভয়াবহ দুর্যোগ ও মানবিক সংকটের সময় উৎসব করতে পারে। সারা দেশ যখন বন্যায় বিপর্যস্ত, আওয়ামী লীগ তখন একটি সেতু উদ্বোধন করতে উৎসবে মেতেছে। ৯ কোটি টাকা খরচ করে টয়লেট নির্মাণ করেছে। অথচ সিলেটের মানুষ আজ ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন। তাদের দুর্দিনে আওয়ামী লীগ উৎসব করছে।
বানভাসি মানুষের জন্য সরকার মাত্র ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জানিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটকে নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। বন্যা দুর্গত লাখ লাখ মানুষের জন্য সিলেটে মাত্র ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা জনপ্রতি দেড় টাকা করে পড়েছে। অথচ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য ৯ কোটি টাকা দিয়ে টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এর চেয়ে নিন্দনীয় আর কী হতে পারে।
তিনি বলেন, সিলেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী যা দিয়েছেন শুধুমাত্র যুবদলই তার অর্ধেক দিয়েছে। শুক্রবার ১৫ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছে। শনিবার আসবে ছাত্রদলের একটি টিম। পরের দিন মূলদল বিএনপির আরেকটি টিম আসবে। আর বিএনপিতো শুরু থেকেই মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, দুর্যোগের সময় খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যাননি। ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে সিলেটের স্থানীয় সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই দুর্যোগের সময় সবার আগে তার মানুষের পাশে থাকার কথা। অথচ ২০০৪ সালে বিএনপির আমলে বন্যার সময় প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সিলেটের বন্যার্তদের জন্য তাৎক্ষণিক ১০ হাজার মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেন। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের নিজ এলাকার প্রতি টান নেই।
বিএনপি নেতা আব্বাস বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হবে এটা স্বাভাবিক। এর জন্য সিলেটে বন্যা নয়। আওয়ামী লীগ এক ব্যক্তির মনের খায়েশ পূরণ করতে ইটনা-মিঠামইন হাওরে অপরিকল্পিতভাবে ৩৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করায় এ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া আসামে বন্যা হবে এর পূর্বাভাস জেনেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারের গাফিলতির কারণে সিলেটসহ দেশের ২১টি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। কৃত্রিমভাবে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে ভারত আমাদের বন্ধু। এই বন্ধুই বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দেয় আর শুকনো মৌসুমে পানি বন্ধ করে দেয়। বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু এবারের বন্যা ব্যতিক্রম। প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ফারাক্কা বাঁধের ১৯টি গেইট খুলে দিয়ে আমাদের ডুবিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মুনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মওলা শাহীন, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ, সিলেট জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মোমিনুল ইসলাম মুমিন, সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ, সিলেট মহানগর যুবদলের সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেকসহ যুবদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।