পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বিশ্ব দরবারে দেশ ও জনগণকে আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
স্বপ্নের ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২৪ জুন) দেয়া এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন। শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক ‘পদ্মা সেতু’র শুভ উদ্বোধন হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। বাস্তবায়িত হচ্ছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক মেগা প্রকল্প। স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ উত্তাল পদ্মার বুকে জাতির গৌরবের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসব অর্জনের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সাহসিকতা, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ সেতুর বাস্তবায়ন সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি ও দক্ষতার নিদর্শন হিসেবে বিশ্বদরবারে আমাদেরকে আত্মবিশ্বাসের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে।’
আবদুল হামিদ বলেন, পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সরকার ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফল। সব প্রতিকূলতাকে জয় করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি পদ্মা সেতুর মতো দেশের সকল মেগা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন কামনা করেন।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন শনিবার (২৫ জুন)। এরপর যান চলাচলের জন্য রোববার (২৬ জুন) সকাল থেকে উন্মুক্ত করা হবে স্বপ্নের এ সেতুটি। এটি দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের সংযোগ ঘটবে।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হয়েছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।