ঢাকা: জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির দায়ের করা ধর্ষণ মামলা ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ বদলি করা হয়েছে।
রুবেলকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে দাখিল করা পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ওই ট্রাইব্যুনালে।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে মিরপুর থানায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রুবেলের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন হ্যাপি। এ মামলায় চারদিন কারাগারেও ছিলেন রুবেল। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নিয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন তিনি।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) মামলাটির নিয়মিত শুনানিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল হকের আদালতে হাজির ছিলেন রুবেল। গত ৬ এপ্রিল দাখিল করা পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে শুনানির জন্য মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ বদলি করে দেন আদালত।
গত ৬ এপ্রিল সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক হালিমা খাতুন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাদিনী হ্যাপির উপস্থাপন করা নাইটি পাপোষ ও জার্সিতে রুবেলের বীর্য পাওয়া যাবে বলে যে দাবি করা হয়েছিল তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তার শারীরিক পরীক্ষা করে মতামত দিয়েছিলেন যে, হ্যাপির শরীরের কোথাও জোরপূর্বক ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেন, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাদিনী প্রাপ্তবয়স্ক নারী। এ হিসেবে পারস্পরিক সম্মতিতে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
সার্বিক বিবেচনায় মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বাদিনী হ্যাপির অভিযোগের দায় থেকে রু্বেলকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলা দায়েরের পর পরই গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন রুবেল। বিচারপতি সৈয়দ এবি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মো: আকরাম হোসেন চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে আগাম জামিন দেন।
আইন অনুসারে বিচারিক আদালত থেকেও জামিন নিতে হয়। তাই আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ৮ জানুয়ারি সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান রুবেল। তার এ আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালত।
পরে ১১ জানুয়ারি রুবেলের জামিনের আবেদন জানানো হলে মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমরুল কায়েস। ওইদিন বিকেলেই কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে পরদিন ১২ জানুয়ারি থেকে জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাম্পে যোগ দেন তিনি। ২৪ জানুয়ারি দলের সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে যান দেশের এ নির্ভরযোগ্য ও কৃতী পেসার।
এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টাইগাররা কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার যে অসামান্য গৌরব অর্জন করেছে, তার পেছনে অন্যতম মূল অবদান রয়েছে রুবেলের।