অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগই দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন,‘বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এটি ইনকাম ট্যাক্স আইনেই আছে। আমি নতুন করে কিছু করিনি। যারা এ সব নিয়ে কথা বলে, তারা অল আর রাবিশ। ইট ইজ আটার্লি ননসেন্স।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সম্মেলনকক্ষে মঙ্গলবার সকালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নায়কি সিনোহারা’র সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমি ঠিক করেছি, রিয়েল স্টেটসে স্কয়ার ফুট অনুযায়ী জরিমানা দিয়ে বিনিয়োগ করা যাবে। এটিও আইন অনুযায়ী।’ তিনি দাবি করেন, মিডিয়ায় এ বিষয়ে যা লেখা হচ্ছে তা ভুল খেলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০১৪ পাশ করার সময় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন,‘ আবাসন খাতে প্রতি বর্গমিটারে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদান করলে বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগ মেনে নেয়ার বিধানটি কর প্রদান পদ্ধতিতে সরলীকরণ মাত্র। কোন করদাতা অতীতে তার আয়ের উপর সঠিকভাবে কর পরিশোধ না করলে পরবর্তীতে প্রযোজ্য কর এবং জরিমানা পরিশোধ করে কর অনারোপিত আয়ের উপর কর পরিশোধ করতে পারে। এেেত্র করদাতাকে কোন ছাড় দেয়া হয়নি। প্রচলিত হারেই তাকে জরিমানাসহ কর দিতে হয়। এ ধরনের সুযোগ কর প্রদান ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য রার্থে রাখা প্রয়োজন বিধায় এ দুটি বিধান অব্যাহত রাখা যায়।’
এর আগে, গত ৫ জুন ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করেননি। ফলে সবাই ধরে নিয়েছিল আগামী অর্থবছরেও এ সবখাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ৬ জুন বাজেটোত্তর এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো খাতেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নেই। বাজেট বক্তৃতায় যদিও বিষয়টি আমি বলিনি। তবে এখন বলছি, আগে এ বিষয়ে যেসব সুযোগ ছিল তা বাতিল হল। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তিনটি খাতে (ফাট ও জমি কেনা এবং ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ) কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই সুবিধা নিয়ে এ পর্যন্ত এসব খাতে মাত্র ৩৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এ েেত্র সরকার ট্যাক্স পেয়েছে মাত্র ৩৪ কোটি টাকা।
তিনি আরও উল্লেখ করেছিলেন, এ হিসাব দেখে মনে হয় দেশে কালো টাকা নেই। কিন্তু কালো টাকা আছে। যেহেতু এই সুবিধায় সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, সেই কারণে এটা বন্ধ করা হল। তিনি বলেন, আমরা পূর্বে এক গবেষণায় দেখেছি দেশে কালো টাকা পরিমান জিডিপি ৪৯ শতাংশ থেকে ৮৯ শতাংশ। এখন আবার নতুন করে গবেষণা করে দেখতে হবে কালো টাকা পরিমান কী অবস্থায় রয়েছে। তারপরও এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যে’র প্রেক্ষাপটে এনবিআর কর্মকর্তাও বলেন, ১০ শতাংশ জরিমানাসহ কোনোখাতেই আগামীতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হবে না।